গণপ্রহরী ডেস্ক : বিজ্ঞানী-প্রযুক্তিবিদদের আবিষ্কারের ও উদ্ভাবনের শেষ নেই। বিজ্ঞানের যুগ থেকেই উন্নত স্তরের ইন্টারনেট যুগে বিশ্ব। সেই বিজ্ঞান-প্রযুক্তিকেও যেন হার মানিয়েছে সাধু বেশের শয়তানদের শয়তানি। এই সাধুবেশের সাধু শয়তানদের একজনের শয়তানির মাত্র একটি কাহিনী আলোচনার লক্ষ্য নিয়ে লেখা। যার একটিতেই সাধু শয়তানের শয়তানি ফাঁস।
ধর্মগ্রন্থমতে, ‘শয়তান’ বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সৃষ্টি নয়। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মগ্রন্থ-আলকোরআন ও হাদিসগ্রন্থ সমূহের বর্ণনা সূত্রে শয়তান সৃষ্টি ও পৃথিবীতে প্রেরেণ সম্পর্কে মানুষ অবগত। অন্যান্য ধর্মগ্রন্থে ভিন্নভাবে হলেও শয়তান ও তার কর্মকাণ্ড আলোচিত।
এসব ধর্মগ্রন্থের বর্ণনা মতে পরস্পরের আলোচনায় শয়তান ও শয়তানের শয়তানি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেনও মানুষ। এছাড়া গল্প ও উপন্যাসের পাতায় পাতায় রয়েছে শয়তানির কল্পকাহিনী। কিন্তু একটিতেই সাধু শয়তানের শয়তানি ফাঁস- এর কাহিনী বোধ হয় নেই। এমনটা মনে করেই আজকের এই লেখা।
দুর্ভাগা আমাদের জাতি অর্থাৎ বাংলাদেশীরা। যদিও তাঁরা জেনে আসছেন শয়তান এত ক্ষমতাধর যে মানুষের রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করতে পারে। তাঁরা এও জানেন যে, ধর্মগ্রন্থে দলবদ্ধ শয়তানের চক্রে না পরার জন্য সতর্ক করা আছে। তারপরও কেউ শয়তানির চক্রে পরলে বা শয়তানিতে অংশ নিয়ে শয়তানকে জিতিয়ে দিলে, সব ধর্ম মতেই শাস্তি পেতে হবে।
তারপরও আলোচিত সাধুবেশের সাধু শয়তানরা ক্ষমতাধর ও দলভুক্ত হওয়ায় অর্থাৎ সিণ্ডিকেট গড়ে তুলেই শয়তানির জাল বিস্তার করেছে গোটা দেশে। নতুন করে আবারো শয়তান ও তার শয়তানি নিয়ে পরস্পর পরস্পরে আলোচনা শুরু। সেই আলোচনাকে প্রাণবন্ত করতে পাঠকের মাধ্যমে জনসাধারাণের কাছে পৌঁছে দিতেই আলোচিত শয়তানি ফাঁসের কাহিনী তুলে ধরার পালা।

এবার শুনে রাখনু পাঠক, সিণ্ডিকেট ভুক্ত শত সহস্র সাধু শয়তানের মধ্যে একজনের শত শয়তানির ‘একটি’ কাহিনী। যে কাহিনীকে ভিত্তি করে চারদিকে বিবেক দিয়ে তাকিয়েই দেখুন। দেখবেন-বুঝবেন আলোচিত ‘একটি কাহিনী শত কাহিনীর উদাহরণ হবে। তবে হ্যাঁ, ‘কাহিনীটি’ তুলে ধরার আগে একটি কাহিনী দিয়ে ‘কাহিনী’র উদাহরণ বিবেচনার ক্ষেত্রে, যা মনে রাখতে হবে।
এই সাধু শয়তানরা কতটা দূরদর্শী ও কথামালায় যুক্তির মাষ্টার, তা বুঝে নিতে হবে বিবেক দিয়ে। তাহলো আলোচিত শয়তানির জন্য শয়তানরা বেশি সময় নেয় কেন। কারণ, ‘যত সময় তত দাম বৃদ্ধি এবং তত কামাই’। আর ২৪ ঘন্টার মধ্যে এক ঘন্টার প্রস্তুতি পর্বের মহড়াতেই শেষ। জনগণ বুঝলেই হলো যে, কাজ হচ্ছে। এভাবেই সাধু শয়তানদের শয়তানিতে ‘রোলমডেল’ খেতাব।
এবার দেখা যাক, রোলমডেল খেতাবধারী সাধু শয়তানদের ‘এক টাকার ঘোড়াকে দশ টাকার দাওয়া খাওয়ানো’ প্রবাদকে হার মানানো শয়তানি কার্যকলাপ বিবেচ্য। তাতে মাত্র সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ের শয়তানি কাজে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা লুটপাটের শয়তানির কাহিনী।
না; এ ভাবধারায় লিখলে পাঠক ধৈর্য্য হারাবেন, বিবেক এমনটাই বলছে। এ ছাড়া মনে এমূহুর্তে সন্দেহে দোলা দিয়েছে, এক শয়তানির কাহিনীর মাঝে একাধিক কাহিনী ভর করতে পারে। তাই ভালোর ভালো শয়তানির কথায় ফিরে যাই। অর্থাৎ সাধু শয়তান বিষয়ের কথায় ফিরে যাই।
কথায় আছে, ‘চোর চুরি করতে সফল হলেও ধরা পরার নমুনা রেখে যায়’। তেমনি জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যূত্থানকে ব্যর্থ করার শয়তানির উদ্দেশ্যে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালনায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মেট্রোরেলের ক্ষতি সাধনসহ বিভিন্ন অফিস আদালতেও ক্ষতি করা হয়। প্রমাণ সরকারের হাতে রয়েছে। নমুনা সংরক্ষণের যে অনেক পন্থা আছে, তা ভুলে যায় বেমালুম শয়তানরা।
গলাবাজি করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার উপর দোষ চাপিয়ে সাজানো অনেক কল্পকাহিনীও বলেছেন জনসম্মুখে সাধু শয়তানরা। ‘ঘোড়াকে ঘাস খাওয়ানো’ প্রবাদকে হার মানানো আরেক শয়তান সিণ্ডিকেট কল্পকাহিনীতে বলেছেন, এই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞে ক্ষতিগ্রস্থ স্টেশন দুটি রক্ষণাবেক্ষণ শেষে চালু করতে সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে এবং সময় লাগবে এক বছর। উন্নয়নের জয়যাত্রার কার্যক্রমে ছিল সাধূ শয়তানদের এমন শয়তানি।
তবে স্বীকার্য যে, ছাত্রজনতার আন্দোলনকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ছিল। কর্মসূচীকালে রাজধানীর মিরপুরের ১০ নম্বর গোলচত্বরে থাকা পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। ফলশ্রুতিতে স্টেশন দুটি ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং ব্যবহার বন্ধ রাখতে হয়।
পরিশেষে শয়তানের গালে চপেটাঘাতের কথা বলবো না। বলবো ২ মাস ২৭ দিন পরে সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে ট্রেন চলছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে মেট্রোরেলের মিরপুর-১০ স্টেশন পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এসে ১ বছর নয়, দুই মাসের মাথায় কাজীপাড়া মেট্রোস্টেশন, এরপর দুই মাস ২৭ দিনের মাথায় সচল হয় ব্যস্ততম স্টেশন মিরপুর-১০।
উপদেষ্টা জনসম্মুখে হিসাব তুলে ধরে বলেছেন, আমাদের মিরপুর-১০ স্টেশন চালু করতে খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। গত ২০ সেপ্টেম্বর ২২ লাখ টাকা ব্যয়েই কাজিপাড়া স্টেশনটি চালু হয়। তবে যেহেতু অন্যান্য স্টেশনগুলো থেকে অনেক যন্ত্রাংশ এনে এখানে সংযোজন করেছি, তাই সেসব যন্ত্রাংশ আমদানিসহ আমাদের দুই স্টেশনে মোট খরচ হবে ১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। সেখানে সাধু শয়তানদের প্রয়োজন ছিল সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। সময়ের প্রয়োজন ছিল ১ বছর। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে সবাই মিলে কি একসাথে বলবো- একটিতেই সাধু শয়তানের শয়তানি ফাঁস।
