গণপ্রহরী প্রতিবেদন : কর্মসংস্থানে কৃষিকে এ মূহুর্তে প্রাধান্য দিতে হবে। পাশাপাশি বিজ্ঞানসম্মত কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত ও দক্ষ কর্মক্ষম মানুষ গড়ে তোলার কারখানায় পরিণত করতে হবে দেশকে। দুর্ভাগ্যবশত: বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে আমাদের দেশ পিছিয়ে থাকলেও শিক্ষিত কর্মক্ষমরা যেন শিক্ষ অর্জনই করেছেন অফিস আদালতে চাকুরি করার জন্যই। কিন্তু কর্মখালি নেই।
ভালো চাকরির অভাব,বেতন কম,ব্যবসাতেও নানান ঝুঁকি ও নরিাপত্তাহীনতা বিবেচনায় বিদেশে পাড়ি জমাতে তৎপর। চাইলেইতো আর বিদেশ যাওয়া যায় না। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো যে আমাদের মত দেশ থেকে লোক নেয় না, তাও কিন্তু নয়। মাধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে চাহিদাতো রয়েছেই।তাদের চাহিদায় প্রাধান্য থাকে দক্ষতা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষতা সৃষ্টির জন্য রয়েছে যথাযথ প্রশিক্ষন ব্যবস্থা। বিজ্ঞান প্রযুক্তি নির্ভর কর্মমূখী শিক্ষাতো তাদের শিক্ষা ব্যবস্থাতেই রয়েছে। কর্মক্ষম শিক্ষিতরা বেশীর ভাগই মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমিকের কাজে যেতে আগ্রহী নয়। তাই ‘কর্মসংস্থানে কৃষিকে এ মূহুর্তে প্রাধান্য দিতে হবে’।
বাস্তবতা বলছে, দেশে শিল্প কলকারখানা বাড়লেও কৃষি ক্ষেত্রে কাজে নিয়োজিত সংখ্যা বেড়েছে সবচেয়ে বেশী। উপরন্ত করোনার সময়কালে অনেকেই চাকুরি হারিয়ে ফিরে গেছেন গ্রামে। পৈত্রিক জমাজমির পরিমান কমলেও যুক্ত হয়েছেন কৃষি কাজেই। যদিও সত্য যে, শিক্ষিতরা যদি কৃষিতে মনোনিবেশ করেন এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তির আলোকে চাষাবাদ করেন তাহলে অনেক ভাল ফল পাওয়া যাবে ও যাচ্ছেও। কিন্তু পতিত স্বৈরাচারের শাসনামলে তাদের লক্ষ্যের অর্থ কামাই ও পাচারের জন্য উন্নয়নের জোয়ারে কৃষি জমি কমেছে এবং কৃষকের সংখ্যাও কমেছে। যদিও করোনাকালে কিছু সংখ্যক যুক্ত হয়েছেন কৃষিতে। সেহেতু ‘কর্মসংস্থানে কৃষিকে এ মূহুর্তে প্রাধান্য দিতে হবে’।
উপসংহারে কর্মসংস্তানে কৃষিকে এ মূহুর্তে প্রাধ্যন্য দিতে হবে শীর্ষক আলোচনায় ঘুরে ফিরে যে কথাটি সামনে আসে। তাহলো জুলাই-আগষ্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে স্বৈরশাসকদের পতন হয়েছে বটে। তবে তারা যে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করেছে, তা ফিরিয়ে এনে সেই অর্থে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার প্রতি নজর দিতে হবে অন্তর্বর্তী সরকাকে আপাতত। এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে রপ্তানী মূখী কৃষি উৎপাদনে মনোযোগী হতে হবে।
অন্যথায় কাঙ্খিত জীবনের আশায় যারা আমেরিকা-ইউরোপের দেশে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তারা দালাল ও পাচার চক্রের খপ্পরে পড়ে ভূমধ্যসাগরসহ বিভিন্ন পথে বিদেশে যেতে কাকেও জীবন হারাতে হচ্ছে। জমাজমি-সহায়সম্পত্তি বিক্রি করে যে অর্থ নির্ভর করে বিদেশ যাত্রা, সে অর্থসহ সর্বস্ব হারিয়ে কারাবরণ করতে হচ্ছে, অমানষিক নির্যাতন ভোগ করতে হচ্ছে। আমাদের দেশের পাটকল, চিনিকল, চা ও চামড়া শিল্প যথারীতি চালু করতে পারলে নতুনদের যেমন কর্মসংস্থান হবে। তেমনি চাকরি হারানো দক্ষরা নতুনদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি বিজ্ঞান-প্রযুক্তি নির্ভর কর্মমূখী শিক্ষা ব্যবস্থা কার্যকর করতে পারলে সুখী-সমৃদ্ধশালী দেশ গড়তে সময়ের অপেক্ষামাত্র।
