Mon. Sep 1st, 2025
চিকিৎসার নিরাপত্তা নেই সাধারন মানুষেরচিকিৎসার নিরাপত্তা নেই সাধারন মানুষের

গণপ্রহরী ডেস্ক : চিকিৎসার নিরাপত্তা নেই সাধারন মানুষের। এই নিরাপত্তাহীনতা আজকের নয়। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। বললে ভুল হবে না যে, মানুষ আশা করেছিলেন এবং নিশ্চিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে বিজয় হলে সমাজ হবে শোষণমুক্ত এবং চিকিৎসাসহ মানুষের মৌলিক অধিকারভোগও নিশ্চিত হবে। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস কোনটাই হয়নি। বরং দুর্ভোগ বেড়েছে চিকিৎসাক্ষেত্র সহ সর্বক্ষেত্রেই। যদিও দেশে বড় বড় অত্যাধুনিক হাসপাতাল হয়েছে, শত শত চিকিৎসক নিয়মিত বেড় হচ্ছে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ থেকে। তারপরও সাধারন মানুষের চিকিৎসার নিরাপত্তা নেই। রাষ্ট্রীয় ভাবে যখন চিকিৎসার নিরাপত্তা নেই সাধারন মানুষের

তখন চিকিৎসা বঞ্চিত সাধারন মানুষের আক্ষেপ থেকে বেরিয়ে এসেছে-কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার চরঞ্চলের মানুষের কোন অপরাধে স্বাস্থ্য সেবা কেন্দও্র নেই। অপরাধের  শিকার হয়ে উপজেলার মশালের চরের গৃহবধু জরিনা বেগমকে হতে হয়েছে সন্তানহারা অর্থাৎ মৃত সন্তান প্রসব করেছেন। কিন্তু কেন? কাছাকাছি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র না থাকায় উপায়ন্তর না পেয়ে শরনাপন্ন হন পল্লী চিকিৎক হিসেবে পরিচিত একজন স্থানীয় চিকিৎসকের। তার চিকিৎসা অব্যাহত থাকতেই মৃত্যু সন্তান প্রসব করেন জরিনা বেগম।

একজন দক্ষ-অভিজ্ঞ সাংবাদিক অনুসন্ধানে পেয়েছেন, উক্ত চিকিৎসকের পরামর্শে ‘অক্সিটোসিন’ ইনজেকশন দেওয়ার ১০ মিনিট পর হতভাগিনী গৃহবধু জরিনা বেগম মৃত সন্তান প্রসব করেন। অপরদিকে একই উপজেলাধীন চরের গাঙচিলা গ্রামের সাজেদা বেগমকে প্রাণ হারাতে হয় অপচিকিৎসায়ই।

তথ্যসূত্রে প্রকাশ, প্রসবের গতি বাড়াতে, জরায়ুর প্রসারণ ঘটাতে এবং প্রসবের পর প্রসূতির রক্তপাত বন্ধ করতে অক্সিটোসিন ইনজেকশন ব্যবহার করা হয়। পল্লী চিকিৎসক এই ইনজেকশন ব্যবহার করতে পারেন কিনা তাঁর সঠিক কোন তথ্য নেই পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে। এমনকি সিভিল সার্জন কার্যালয়েও নেই তথ্য। সে জন্যই বলা হয়, চিকিৎসার নিরাপত্তা নেই সাধারণ মানুষের। চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র না থাকায় চরাঞ্চলে চিকিৎসার নিরাপত্তা নেই সাধারণ মানুষের’-এ নিয়ে কথা না হয়, এখানে থাক।

দেশের উত্তরজনপদের অন্যতম চিকিৎসা নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠান রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল নিয়ে জনমত কি বলছে। বিভাগীয় শহরটিতে অর্থাৎ রংপুর শহরে গড়ে ওঠা প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসাপাতল সমূহের দালালদের দৌরাত্মে দূরদূরান্ত থেকে আগত রোগীদের স্বজনরা ধারে কাছেই পৌঁছাতে পারতেন না। এখন কিছুটা দৌরাত্ম কম চোখে পড়ছে। যদিও এ অবস্থা দেশব্যাপী। কারণ মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষক-চিকিৎসক এবং সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালে প্রাক্টিস করে থাকেন। সেহেতু তাদের হাতে সময় একেবারেই কম। ফলে যে রোগীরা সুযোগ পান তাদেরও বিস্তারিত বলার সময় হয়না, প্রায় সকল ক্ষেত্রেই। সেজন্যই সাধারণ মানুষের আক্ষেপ-‘চিকিৎসার নিশ্চয়তা নেই সাধারণ মানুষের’।

আলোচনায় রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা, অবহেলা ও তদারকি না করায় পরিবেশের চরম অবনতি হয়েছে। চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত গ্লাভস ও সিরিঞ্জসহ অন্যান্য চিকিৎসা বর্জ্যাদি এবং রোগীদের খাবারের উচ্ছিষ্ট ও ব্যবহৃত নানা প্রকার জিনিসপত্র যত্রতত্র খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হচ্ছে। হাসপাতালটি যেন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের অভ্যন্তরে ওয়ার্ড ও করিডোর সমূহ অপরিচ্ছন্ন ও দুর্গন্ধময়।

বিজ্ঞজনদেরকেই ভাবতে হবে। কারণ, নীতিগতভাবেই বিজ্ঞজন হিসেবে তাদের ওপর রয়েছে সামাজিক দায়দায়িত্ব। চিকিৎসা নিতে এসে মানুষ যেন এসব দুরাবস্থার কারণে সৃষ্ট কোনো রোগের ঝুঁকিতে না পড়েন। এমনিতে চিকিৎসা নিশ্চয়তা নেই সাধারণ মানুষের।

উল্লেখিত পরিস্থিতির আলোকে নার্সিং কলেজ রংপুর- এর শিক্ষার্থী চৌহান সজল সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যাতে দ্রুত সময়ে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী নিয়োগ করে ও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা চালু করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে সুষ্ঠ পরিবেশ বজায় রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করেন এমনটাই আশা করেছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *