Thu. Jul 10th, 2025
দেশ ও জনগণের স্বার্থে তর্ক-বিতর্ক নয়- তারেক রহমানদেশ ও জনগণের স্বার্থে তর্ক-বিতর্ক নয়- তারেক রহমান

কেএস মৌসুমী : জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠয় ঐক্যবদ্ধতার কোন বিকল্প নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করাই রাজনীতির মূল্য লক্ষ্য। সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ৩১ দফার আলোকে কাজ করে যাচ্ছে। কেননা, তিনি বিশ্বাস করেন ও তার এবং জনগনের চাওয়া শোষন-নির্যাতন ও বৈষম্যমুক্ত আগামীর বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রয়াত বিএনপি নেতা তরিকুল ইসলামের রাজনৈতিক জীবন ও শিষ্ঠাচার থেকে আজকের প্রজন্মকে শিক্ষা গ্রহনের আহবান জানান। মা, মাটি ও মানুষের মুক্তির জন্য মরহুম তরিকুল ইসলাম নিজেকে আমৃত্যু নিয়োজিত রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষক ও বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ প্রদর্শক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের এবং আপোষহীন নেত্রী ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সরকার পরিচালনার পথে সহযোদ্ধা ছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী।

গত ৬ নভেম্বর যশোরে, জেলা বিএনপি আয়োজিত জনপ্রিয় প্রবীন বিএনপি নেতা মরহুম তরিকুল ইসলামের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠান-‘স্মরণ সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন তারেক রহমান। স্মরন সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। এবং বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ড বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন। স্মরণ সভায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত তরিকুল ইসলামের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী তুলে ধরে যশোর জেলা বিএনপি পক্ষে সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা বারের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম অ্যাডভোকেট, অধ্যাপক আয়ূব হোসেন, ডাঃ হারুন অল রশীদ, প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, তন্ময় সাহা, মোশাররফ হোসেন, মত্তলানা বেলায়েত হোসেন, ছাত্রদল সভাপতি রাজিদুল রহমান সাগর প্রমুখ।

মরহুম তরিকুল ইসলামের স্মরণ সভায় মরহুমের সহধর্মিনী অধ্যাপক নার্গিস বেগম, পুত্র শান্তনু ইসলাম সুমিত ও অনিন্দ্য ইসলাম অমিত উপস্থিত ছিলেন। দলীয় ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মিজানুর রহমান খান, সাবেক পৌর মেয়র মরুফুল ইসলাম মারুফ, মাওলানা আব্দুল মান্নান,  শরফুদ্দৌলাহ  ছটলু, যুবদল সভাপতি তামাল, সম্পাদক আনছারুল হক ও সেচ্ছা-সেবক দল সভাপতি রবিউল ইসলাম প্রমুখ। এবং খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্মরণ সভায় উপস্থিতিদের স্মরণ করে দেন যে,  জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠয় ঐক্যবদ্ধতার কোন বিকল্প নেই অর্থ উপার্জন বা লাভবানের হাতিয়ার হিসেবে যারা রাজনীতি করে আসছেন, তাদের পরিণতি সমগ্র দেশের মানুষ তা প্রতক্ষ্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে পতিত স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের পরিণতি কি হয় ও হতে পারে। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেছেন, মানুষের ও গণবিপ্লবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধতার কোন বিকল্প নেই। মরহুমে তরিকুল ইসলাম মানুষের অধিকার নিয়ে নি:স্বার্থভাবে কাজ করেছেন; স্মরণসভায় হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা প্রমাণ করেছেন। সাবেক এই মন্ত্রী সারা জীবনই বেঈমানী করেননি আদর্শের সাথে।

প্রয়াত নেতা রাজনীতির কারণে এবং আদর্শচ্যুত করার স্বৈরাচারী চেষ্টায় আপোষ করেননি। সে কারণে জনপ্রিয় নেতা তরিকুল ইসলামকে এরশাদ সরকারের স্বৈরশাসনামলে এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার স্বৈরশাসনামলে হামলা ও মামলার শিকার হতে হয়েছে। এরশাদ শাসনামলেতো কিছুদিন গুম করে রাখা হয়েছিল।

পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনা শাসনামল ও ওয়ান ইলেভেন সরকারের আমলে বার বার কারাবরণ ও মামলা-হামলার শিকার হতে হয়েছে মরহুম তরিকুল ইসলামকে। তিনি বলেন মরহুম নেতাকে যতটুকু সময় কাছে পেয়েছেন সেই সময়টুকুতে রাজনীতি করা শিখেছেন, মানুষের জন্য। তাইতো তিনি বলতে পারছেন ‘জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই’।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রয়াত নেতাকে স্মরণ করে বলেন, এ সভা বক্তব্য দেওয়ার নয়। তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার হাসিনাকে আমরা উৎখাত করেছি, ছাত্রজনতার মহা বিপ্লবের মাধ্যমে। কিন্তু স্বৈরাচারের প্রেতাত্মা ও দোসররা তাদের পুন:প্রতিষ্ঠার জন্য প্রশাসনকে অস্তিতিশীল করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। তাই সব ভূল বোঝাবুঝির অবসান করে গণতন্ত্রের পথে চলতে বজ্র কঠিন শপথ নিতে হবে জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসীদের। বিএনপি সংষ্কার প্রস্তাব হিসেবে জাতির সামনে যে ৩১ দফা দাবি ভুলে ধরেছে, তা পূরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কেননা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধতার বিকল্প নেই।

স্মরণ সভায় তারেক রহমান, মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে প্রয়াত নেতার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা এবং বিএনপি নেতৃত্ব প্রসঙ্গে নেতাকর্মীদের শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেছেন, মরহুম তরিকুল ইসলাম তাঁর কর্ম ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে পর্যায়ক্রমে দলের যুগ্ম সচিব থেকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হয়েছেন। অত:পর বিএনপির ভাইস চেয়াম্যান এবং আমৃত্যু নীতি-নির্ধারণী স্থায়ী কমিটি সদস্য থেকে বিএনপিকে শক্তিশালী করে গেছেন, সমৃদ্ধ করে গেছেন।

[যশোর থেকে সংবাদদাতা আলী আক্কাস প্রেরিত প্রতিবেদন সংক্ষেপিত]

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *