গণপ্রহরী রিপোর্ট: ডাকসু নির্বাচন শেষ মুহুর্তেও কঠিন পরীক্ষার মুখে। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাদে প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালসহ শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়েগুলোর নির্বাচন ঘিরে সচেতন জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তন্মধ্যে প্রাধান্য পেয়েছে- তারুণ্যের নেতৃত্ব সৃষ্টিতে এবং জাতীয় আকাঙ্খা পূরণে নির্বাচিতব্য কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ রেখে যথাযথ ভূমিকা পালনে সক্ষম হবেতো (?)-’ প্রশ্নটি। এটা তাঁদের প্রাণের চাওয়া। এবং অনেক বছর ধরে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নির্বাচনের অভিজ্ঞতাই না থাকায়, রাত শেষের সকালে থেকে অনুষ্ঠিত ‘ডাকসু নির্বাচনের দিকে জাতির দৃষ্টি থাকছে ও থাকবে। এটা বলা ভুল হবে না যে, দেশবাসী বিশ্বাস করেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন’ অনুষ্ঠানে শেষপর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচন সফল হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃত্বে চব্বিশের সফল গণঅভ্যূত্থান দেশ, জাতি ও জনগণের সামনে নতুন করে তারুণ্যের সফলতার স্বাক্ষ্য হিসেবে তাঁদের সামনে ভাসছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের রক্তপথে উনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী নব্বই-এর গণঅভ্যূত্থান এবং সাড়ে ১৫ বছর কালের ভারতের অনুগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ ও তাদের দোসরদের স্বৈরশাসনের নিষ্ঠুরতা থেকে দেশ, জাতি ও জনগণকে মুক্ত করার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের চব্বিশের সফল গণঅভ্যূত্থান। তাই তাঁদের বিশ্বাস তারুণ্যরাই পারবে জনআঙ্খা পুরণ করতে। কেননা তাঁরা তা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে বারবার প্রমাণ করেছে।
দেশের সর্বোচ্চস বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীরা দেশ-বিদেশী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে ঐক্যবদ্ধ থেকে ‘ডাকসু’ নির্বাচনসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদ নির্বঅচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারলে, চব্বিশের শহীদদের আত্মত্যাগকে স্বার্থক করার ক্ষেত্রে কয়েক ধাপ এগিয়ে যেতে সক্ষম হবেন। আর এই ঐক্যবদ্ধ সফলতাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল করার ক্ষেত্রে ছাত্রজনতার ঐক্যকে যেমনি সুদৃঢ় করকেব; তেমনি সকল ষড়যন্ত্রের জ¦াল ছিন্নভিন্ন করে শহীদদের স্বপ্ন পূরণে জাতীয় নির্বাচন সফল করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। যদিও বাংলাদেশের ভিত্তি-‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত লক্ষ্যের শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা কিংবা চব্বিশের গণঅভ্যূত্থানের সফলতার মুলে চাওয়া বৈষম্যমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সম্ভাবনা নেই বলা যায়। অর্থাৎ শহীদদের আত্মত্যাগ স্বার্থক হচ্ছে না। তা স্বার্থক করতে সমাজ বদলের রাজনীতিতে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। সেপথে চলার ক্ষেত্রে ক্ষেত্র তৈরীতে নির্বাচনীতো এই নির্বাচন।
৯ সেপ্টেম্বরের ডাকসু নির্বাচনসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রতিটি নির্বাচনকে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। যাতে করে জাতীয় ক্ষেত্রে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ মানুষের জন্মগত মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায় বিচারসহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার মতো নেতৃত্ব তৈরীর পথ উন্মুক্ত হয়। যে নেতৃত্ব মহান মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত লক্ষ্যের শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠাকল্পে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনে এগিয়ে চলার পথে জাতীয় ঐক্যকে সুদৃঢ় করতে ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
মনে রাখতে হবে বিজ্ঞানসম্মত, মানসম্পন্ন সুশিক্ষা বিকাশের মধ্য দিয়ে শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ছাত্রসংসদের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম অপরিহার্য। কেননা, দেশের আপামর মানুষ ইতিহাস পড়ে না, ইতিহাস লেখে না। তাদের দৈনন্দিনের জীবনপথ পাড়ি দিতে জীবন দিয়ে শিক্ষা নেন। তাদের জীবন থেকেও শিক্ষা অর্জনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র সামজের তথা তারুণ্যের। এক মূহুর্তের জন্য ভুলে যাওয়া যাবে না যে, ‘ব্যাক্তির উর্ধ্বে সংগঠন আর সংগঠনের উর্ধ্বে দেশ’। গণপ্রহরীর আশাবাদ- দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রিয় ছাত্র সংসদ হোক-‘দেশপ্রীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ জাতি ও জনগণের স্বার্থে আত্মবলিদানে বলিয়ান নেতা-কর্মীদের সংসদ। তবেই যে বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তির আকাঙ্খা নিয়ে শ্রমজীবি, শোষিত-বঞ্চিত অধিকারহারা ও বৈষম্যের শিকার ছাত্র-যুবব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ স্বৈর সরকার পক্ষের গুলির মুখে এগিয়ে যেতে যেতেই সফল করেছেন চব্বিশের গণঅভ্যূত্থান। তাই ‘শহীদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না’। ডাকসু নির্বাচনসহ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রতিটি নির্বাচন সফল হোক। এবং তার প্রতিফলন ঘটুক আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে- এটাই গণপ্রহরীর কামনা।
