নিজস্ব প্রতিবেদক : ডেঙ্গু আতঙ্কের মাঝে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক। দীর্ঘদিন থেকে মশাবাহি ডেঙ্গু আতঙ্ক বিদ্যমান। এবং কম-বেশি মৃত্যুবরণ করে চলছেন মানুষ। গণহত্যাকারী পতিত স্বৈরাচারের শাসনামলে মশা নিধনের নামে টাকার অপচয় বা রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয় পর্যন্তই শেষ। জুলাই গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মানুষ আশা করেছিলেন মশা নিধনসহ ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গৃহীত হবে। নিশ্চিত হবে-মানুষের মৌলিক অধিকারের চিকিৎসা’। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্যই যেন সহায় হচ্ছে না। উপরন্ত এরই মধ্যে সর্বদিক থেকে পিছিয়ে থাকা উত্তর জনপদের রংপুর অঞ্চলে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।
ডেঙ্গু আতঙ্কের মাঝে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক নিয়ে করনীয় স্পর্কে জননগণের কল্যানের নামে যাঁরা রাজনীতি করছেন তারা সরকারকে সুচিন্তিত ও যৌক্তিক পরামর্শ দেওয়ার সময় পাবেন কি-না,তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। কেননা, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে মাঠ গরম করার ব্যস্ততায় সময় কাটাচ্ছেন। কলমযোদ্ধা সাংবাদিকরা পত্রপত্রিকায় লিখছেন এবং সচেতনতাবোধ থেকে ‘আমাদের গাইবান্ধা’সহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ডেঙ্গু ও অ্যানথ্রাক্স সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করে যাচ্ছে। সূত্র মোতাবেক, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া মশাবাহিত হলেও অ্যানথ্রাক্স গবাদী পশু (মাংস খাওয়া ও মাংস কাটাছেড়ার মাধ্যমে) থেকে ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষত: রংপুরের পীরগাছা, কাউনিয়া, পীরগঞ্জ এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
ডেঙ্গুতে দেশের রাজধানীসহ প্রায় সর্বত্রই কম-বেশী মানুষ আক্রান্ত হলেও অ্যানথ্রাক্স এ মূহুর্ত পর্যন্ত এলাকাভেদে প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে। যেমন পীরগাছা উপজেলার পারুল, ইটাকুমারী, ছাওলা ও তাম্বলপুর এলাকায় দুই শতাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এবং সূত্রে মতে আক্রান্তদের মধ্যে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ পশুর মাংস বাজারে বিক্রি করায় এবং তা মানুষ কিনে নিয়ে খাওয়ায়ই আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জনমত। এমনকি পশু জবাই ও মাংস কাটাছেড়া ও বেচাকেনার সাথে জড়িতরাও আক্রান্ত হচ্ছেন।
তাই এখনই দেশের হাট-বাজারে কঠোর নজরদারি ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আক্রান্তদের সুচিকিৎসাসহ বিভিন্ন পশু পালনকারী বাসাবাড়ী ও খামারে পশুর টিকাদান আবশ্যক। কেননা, অ্যানথ্রাস্ক রোগে আক্রান্ত এলাকার বাস্তবতা বলছে, শুধু আতঙ্কই ছড়াচ্ছে না; স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ানোর সাথে সাথে জনজীবনে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাবও ফেলছে। স্বাস্থ্য ও প্রাণী সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধি সামাজিক সংগঠন সমূহের নৈতিক দায়িত্বে পরিণত হয়েছে-‘জনসচেতনা বৃদ্ধি’তে ভূমিকাপালন। এবং অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত পশু শনাক্ত করে অন্যান্য পশু থেকে আলাদা করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং অসুস্থ পশু জবাই নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। এ মুহুর্তে প্রাপ্ত খবরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের পশ্চিম বেলকা গ্রামের আবুল হোসেনের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৪৫) অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে, রাজধানীসহ ডেঙ্গু আক্রান্ত ও চিকুনগুনিয়ার আক্রান্ত রোগীর সংখ্য এবং মৃত্যুর সংখ্যা শূণ্যের কোঠায় আনার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের আশু হস্থক্ষেপ কামনা করা যাচ্ছে। একইভাবে রাজনৈতিক দলসমুহ পক্ষে জনস্বার্থে সম্ভাব্য উদ্যোগ গ্রহণ করবেন- এ আশাবাদ জনগণ পক্ষে গণপ্রহরীর।
লেখার এ পর্যায়ে প্রাপ্ত খবরে, প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে জরুরী কার্যক্রম শুরু করেছে। গণপ্রহরী যথাযথ কর্মসূচি সফল করতে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব কর্তব্য পালনের জন্য আহ্বান জানাচ্ছে। কেননা, অনেক ক্ষেত্রেই কর্মসূচি গৃহিত হয় ও প্রচারও হয়। কিন্তু তা ফাইলবন্দি থেকেছে এমন নজির কম নেই দেশে। তাই জাতীয় স্বার্থে গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়ন অপরিহার্য এবং সংশ্লিষ্ট বা তা করবেন বলে আশাবাদ থাকছেই।
