মোঃ আব্দুর রাজ্জাক বকুল : দুর্নীতির বিষাক্ত ছোবলে মহামারী ব্যাধিতে আক্রান্ত। যদিও এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের প্রতিটি স্তরে দূর্নীতির বিষাক্ত ছোবলে মহামারী ব্যাধিতে আক্রান্ত। জাতীয় জীবনে মহামারী অপেক্ষাও অধিক ভয়ানক এক অভিশাপ হিসেবে দেখা দিয়েছে। ফলে দেশ ও জাতি তথা দেশের সিংহভাগ মানুষ এই ভয়াবহ ব্যাধি নিয়ে দিনাতিপাত করছেন। শোষন ভিত্তিক পুঁজিবাদী এ সমাজ ব্যবস্থায়, দূর্নীতিবাজ বিত্তশালী মানুষ পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে গ্রাস করছে অনাহারী নিপীড়িত দরিদ্র মানুষের নূন্যতম সম্পদ।
দূর্নীতিবাজদের এই অতৃপ্ত সর্বগ্রাসী সম্পদ লিপ্সাকে নির্বিঘ্নে নিরাপদে আহরণের জন্য নানারুপ ফন্দি ফিকির অব্যাহত রয়েছে। দূর্নীতিবাজরা একজোট হয়ে মহাদূর্নীতির মাধ্যমে দেশের ও জনগণের টাকা লুট করে আঙ্গুল ফুলে বটগাছ হচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। ফলে দেশে দেখা দিয়েছে দূর্নীতির মহামারীর মহাবিপদ সংকেত। দূর্নীতিবাজরা প্রচুর সম্পদের মালিক। তাদের সম্পদ তৃষ্ণা কোনদিন পরিতৃপ্ত হয় না। তারা “যত পায় তত চায়”।
সরকারি বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান দূর্নীতির অর্থ, প্রতিপত্তি ও লোভের মোহে আক্রান্ত। সকল আমলা, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা যেন টেবিল চেয়ার নিয়ে বসেই আছেন দূর্নীতির মাধ্যমে টুপাইস ইনকাম করে প্রতিযোগিতার দৌড়ে এগিয়ে থাকা। টুপাইস ছাড়া কোন সেবাই পাওয়া যায় না। এটাই যেন রেওয়াজ।
মহান সৃষ্টিকর্তার খেলায় অনেক সময় বিভিন্ন কর্মের মাধ্যমে দূর্নীতিবাজরা বেসামাল হয়ে পড়ে। আবার শক্তিশালী খুটির জোড়ে ঠিক হয়ে পুনরায় দ্বিগুন ক্ষিপ্র গতিতে দূর্নীতির মহামন্ত্রে লাফাতে থাকে। সুযোগ পেলেই সবাই যেন দূর্নীতির মহামন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে লুটপাটে ব্যস্ত হয়ে ওঠার অপেক্ষায়। রাষ্ট্রের সকল স্তরে পচন ধরেছে। সেই পচনের মূলের দুর্নীতির বিষাক্ত ছোবলে মহামারী ব্যাধিতে আক্রান্ত জাতি।
দূর্নীতিবাজদের কারসাজীতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে আমজনতা দিশেহারা। কোটি কোটি আম জনতার আহাজারী রব উঠেছে। বেকাররা দিশেহারা হয়ে মাদকাসক্তে লিপ্ত হচ্ছে। সবারই যেন একই কথা সর্বাঙ্গে ব্যাথা ঔষধ দিবে কোথা। জুলাই-আগাষ্ট ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানে রাষ্ট্রীয় জবরদস্তী ও রাজনৈতিক কর্তৃত্ববাদের সাময়িক অবসান হলেও জনগনের ভাগ্যের মৌলিক কোন পরিবর্তন হয়নি।
দূর্নীতিবাজ ও আমলাদের যাঁতাকলে জনগণ পিষ্ঠ। দূর্নীতিবাজ ও আমলারা বাংলাদেশকে রসগোল্লা মনে করে, একবারে গিলে খাবার পায়তারা করে আসছে। পরিস্থিতিটা এমন-দুর্নীতির বিষাক্ত ছোবলে মহামারী ব্যাধিতে আক্রান্ত জাতি। বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন ছাড়া পরিত্রানের কোন পথ খোলা নেই। তাই কবির ভাষায় বলতে হয় “ক্রনদিসে নিখিল বন্দী হে নবীন মুক্ত করত তারে নিয়ে চলো আলো অভিসারে”।
