গণপ্রহরী ডেস্ক: দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা ১৯ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দেশের ১৯ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে। শহর ও গ্রামে এই দারিদ্র্যের হার ভিন্ন। শহরাঞ্চলে দারিদ্র্যের হার ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ হলেও গ্রামাঞ্চলে এই হার ২০ শতাংশের বেশি।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রোভার্টি অ্যান্ড লাইভলিহুড স্ট্যাটিসটিকস সেল, বিশ্বব্যাংক এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থার যৌথ গবেষণার ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেশের বিভিন্ন বিভাগের দারিদ্র্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে। দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যারি মধ্যে বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, যা দেশের অন্যান্য বিভাগের তুলনায় বেশি। অপরদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে কম, মাত্র ১৫ দশমিক ২ শতাংশ।
ঢাকা বিভাগেও দারিদ্র্যের হার বেড়েছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ঢাকায় দারিদ্র্যের হার ১ দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। তবে রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার তুলনামূলকভাবে কমেছে। বিশেষ করে মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলায় দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, যেখানে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে।
প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।প্রতিবেদন সূত্রে প্রকাশ, “দেশের দারিদ্র্যের হার কমাতে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাসের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।”
উপরোক্ত সূত্রমতে, আলোচিত বক্তব্য ও মতামতের আলোকে বিবেচনার জন্য বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুসারে দারিদ্র্য নিরসনে সুপারিশ করা যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে দারিদ্র্য হ্রাসের জন্য টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস সম্ভব। এছাড়া শিক্ষার প্রসার এবং স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নকেও অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে দেশের দারিদ্র্যের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। এটি নীতিনির্ধারকদের জন্য ভবিষ্যতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হবে।
আরও পড়ুন- ভ্যাট আরোপ গণবিরোধী ও জনআকাঙ্খার পরিপন্থিও
