Sat. Jul 12th, 2025
নারী শিক্ষা নিয়ে কথা বলায় পালাতে হলো মন্ত্রীকেনারী শিক্ষা নিয়ে কথা বলায় পালাতে হলো মন্ত্রীকে

বিশ্ব ডেস্ক: নারী শিক্ষা নিয়ে পালাতে হলো একজন মন্ত্রীকে। আজ মঙ্গলবার আফগানিস্তান আন্তর্জাতিক সূত্র ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলেছে যে, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ আব্বাস স্তানিকজাই প্রকাশ্যে মেয়েদের শিক্ষার নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করার পর গ্রেপ্তারের ভয়ে মন্ত্রীকে দেশ ছেড়ে পালাতে হলো।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মাসে তালেবানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী শের আব্বাস স্তানিকজাই মেয়েদের জন্য স্কুল পুনরায় স্টার্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, “মেয়েদের শিক্ষার নিষেধাজ্ঞা ইসলামী শরিয়াহ আইনের বিরুদ্ধে। এর কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই -না এখন না ভবিষ্যতে’’।

আফগানিস্তানের জনসংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে স্তানিকজাই বলেছিলেন, “আমরা ২ কোটি মানুষের প্রতি অবিচার করছি।’’

খোস্ত প্রদেশে এক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে দেওয়া সেই বক্তব্যটি ছিল তালেবানের ‘‘নারী শিক্ষাবিরোধী নীতির’’ বিরুদ্ধে প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ। বক্তব্যটির ফলে আফগানিস্তানের শাসকদের মাঝে বিরল মতপার্থক্যের সুর পাওয়া যায়।

আফগানিস্তানের বর্তমান তালেবান সরকার তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে নারীদের জন্য ষষ্ঠ শ্রেণির পরে শিক্ষা নিষিদ্ধ করেছে। এই ইস্যুতে, ‘দেশটি আন্তর্জাতিকভাবে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে’।

স্তানিকজাইয়ের বক্তব্যের পর তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা তাঁকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন। এবং তাঁর উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেন বলে জানা যায়। আফগানিস্তান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ‘‘গ্রেপ্তার হওয়ার আগেই, সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে দেশত্যাগ করেন স্তানিকজাই’’।

স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্তানিকজাই অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘তিনি চিকিৎসা করার জন্য দুবাই গিয়েছে”।

নারী শিক্ষার পক্ষে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও স্তানিকজাই কথা বলেছিলেন। তালেবানেরা ক্ষমতা গ্রহণ করার এক বছর পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি বলেছিলেন, “কেউ মেয়েদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেওয়ার ধর্মীয় কারণ দেখাতে পারবে না। শিক্ষা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য বাধ্যতামূলক”।

বিশ্লেষকদের মনে করেন, তালেবানের নেতৃত্বে বিভক্তির বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে তুলেছে স্তানিকজাইয়ের দেশত্যাগের খবর প্রকাশের পর। আফগানিস্তান পুনর্গঠনের জন্য নিয়োজিত মার্কিন বিশেষ পরিদর্শক সংস্থা (এসআইজিএআর) জানিয়েছে, “তালেবানের অভ্যন্তরীণ দুই ক্ষমতার কেন্দ্র—কাবুল ও কান্দাহারের মধ্যে মেয়েদের শিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে”।

সম্প্রতি তালেবানের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নবি ওমারি খোস্ত প্রদেশের এক সভায় মেয়েদের শিক্ষা নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘আমি জানি, ধর্মীয় বিধিনিষেধ থাকলেও এটি বৈধ হওয়া উচিত।’’

আরও পড়ুন- পাকিস্তান কি সামরিক শাসনের দিকে

বাংলাদেশ প্রশ্নে ভারতনীতি ও গণমাধ্যমের ভূমিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *