Sun. Jul 6th, 2025
নির্বাচনের কথা কেন আমরা বারবার বলছি-তারেক রহমাননির্বাচনের কথা কেন আমরা বারবার বলছি-তারেক রহমান

চুয়াডাঙ্গা থেকে সংবাদদাতা : নির্বাচনের কথা কেন আমরা বারবার বলছি। তারেক রহমান বলেন, আমরা নির্বাচনের কথা বলায় অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে যে, বারবার আমরা কেন নির্বাচনের কথা বলছি? আমাদের বিশ্বাস, একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যার মাধ্যমে বাছাই হয়ে আসা জনপ্রতিনিধিরা সংসদে বসে আলোচনার মধ্য দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। দেশের প্রতিটি সেক্টরের সমস্যার সমাধান করা যায়। প্রকৃত ও সত্যিকারের একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সব সংষ্কার বাস্তবায়ন করা সম্ভব।

২৩ নভেম্বর শনিবার চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ষড়যন্ত্র তত বাড়তেই থাকবে। আর সেজন্য দেশ ও দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচনের বিকল্প কোন কিছু নেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের রাজনীতি যদি অসুস্থ বা রুগ্ন হয় তাহলে অসুস্থ হয় দেশের সবকিছু। পতিত স্বৈরাচারের রাজনীতির অবস্থাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তাকিয়ে দেখুন- সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে, স্বৈরাচার সরকার এই রুগ্ন রাজনীতির মাধ্যমে।

তারেক রহমান বলেন, আমরা ৩১ দফা প্রস্তাব করেছি দেশের উন্নয়ন ও সংষ্কারের জন্য। সংষ্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। শুরু করবে একজন আর টেনে নিয়ে যাবে আরেকজন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি সুুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও সত্যিকারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারে তবেই জনগণ তাদের প্রকৃত ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে এবং তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সব রাজনৈতিক দলগুলো মিলে সমর্থন দিচ্ছি এই অন্তর্বর্তী সরকারকে। নির্বাচন প্রয়োজন দেশের মানুষের হাতে ক্ষমতা ফিরে যাওয়ার জন্য।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, শুধু একটি নির্বাচনের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব। নির্বাচন যত দেরিতে হবে, ততই ষড়যন্ত্র বাড়তে থাকবে। কেননা, স্বৈরাচারকে হটিয়েছি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। কিন্ত বিতারিত স্বৈরাচার তো বসে নেই। ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে তার দেশী ও বিদেশী দোসরদের নিয়ে। নির্বাচন দরকার। কারণ, নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা দেশের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সেটি তুলে ধরতে হবে।

সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, দমন-পীড়ন আর নির্যাতনের মধ্য দিয়ে এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ। জনগণের রোষে দেশ থেকে পালিয়েছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ক্ষমতার জন্য নির্বাচন চায়না বিএনপি। বিএনপি নির্বাচন চায় গণতন্ত্র রক্ষার জন্য। নির্বাচন চায় মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আন্দোলনে যারা ছিল বিএনপি তাদের সাথে নিয়েই সরকার গঠন করতে চায় আর এগিয়ে নিতে চায় সংষ্কার কাজ। তরুণদের কাছে দায়িত্ব দিতে চায় বিএনপি। ছাত্র ও তরুণদের সাথে কোনো সমস্যা নেই। ষড়যন্ত্র মোকবিলায়, আর জনগণের স্বার্থে নির্বাচন চায় বিএনপি।

তিনি আরও বলেন, জনগণের সমর্থন লাগবে সংষ্কার করার পর তা টেকসই করার জন্য। এবং তা করতে পারবে নির্বাচিত সরকার ও গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, শামসুজ্জামান দুদু (বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান), নিতাই রায় চৌধুরী (বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান), অনিন্দ্য ইসলাম অমিত (বিএনপির খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক), জয়ন্ত কুমার কুণ্ড (বিএনপির খুলনা বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক), মো. শরিফুজ্জামান শরিফ (চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব), আজিজুল বারী হেলাল (বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্যবিষয়ক সম্পাদক), সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী (কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি), এ এ মজিদ (ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি), মো. জাহিদুজ্জামান মনা (সাধারণ সম্পাদক), শামসুদ্দিন দিদার (বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য) প্রমুখ।

দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল হাসান তুন ও দর্শনা পৌর বিএনপির প্রধান সমন্বয়ক হাবিবুর রহামন বুলেট সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

উল্লেখ্য, ২৩ নভেম্বর দীর্ঘ ১৪ বছর পর বিএনপির সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় চুয়াডাঙ্গা জেলায়। বিএনপির ইতিহাসে চুয়াডাঙ্গায় কোনো খোলা মাঠে এত বড় সম্মেলন আয়োজন হয় এই প্রথম। ৮০৮ জন কাউন্সিলর এবং ১৩ হাজার ডেলিগেট উপস্থিত ছিলেন এই সম্মেলনে।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *