গণপ্রহরীর চাওয়া স্বীকৃতি
কেএসমৌসুমী: পিনাকী ইলিয়াস কনকের প্রতি সারজিস আলমের কৃতজ্ঞতা। গণপ্রহরীর চাওয়া স্বীকৃতি। ইতিহাসের শিক্ষায় বলতে হয়, জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় জীবনে বিশেষত: স্বাধীনতা ও মুক্তি অর্জনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারীদের যথাযথ মূল্যায়ন ও স্বীকৃতিদান আবশ্যক। পাশাপাশি সাত্যিকারের ইতিহাসতো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালকারীদের স্বীকৃতিসহ বিরোধী মতকেও তুলে ধরে ইতিহাসের ধর্ম পালন করে।
একইভাবে অন্যায়-অনাচার, শোষণ-বঞ্চনা, বৈষম্য-প্রতারনার সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনসহ মানুষের মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, নারী অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ভূমিকা পালনকারীদের ভূমিকারও যথাযথ মূল্যায়ন এবং স্বীকৃতি অপরিহার্য। তাতে পরবর্তী প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হয় ও হবে। এ নিয়েই ছোট্ট এই প্রতিবেদন হলেও ‘গণপ্রহরী’ মনে করে, এর গুরুত্ব জাতীয় স্বার্থেই ব্যাপক।
‘পিনাকী, ইলিয়াস, কনকের প্রতি সারজিসের কৃতজ্ঞতা’ শিরোনামটি লিখতেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জুলাই-আগষ্টের আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে রক্তার্জিত গণ- অভ্যূত্থানকে সফল করতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনকারী পিনাকী ভট্টাচার্য, ইলিয়াস হোসেন ও ড.কনক সরোয়ারসহ প্রবাসী সকল ইউটিউবার যোদ্ধাদের ত্যাগের মূল্যায়ন করায় ‘সারজিস আলম’কে গণপ্রহরী পক্ষে অভিনন্দন।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, গণ-অভ্যূত্থানে ভূমিকা রাখা প্রবাসী লেখক ও অনলাইন অ্যক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য, সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও ড. কনক সরোয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশ করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, এই অভ্যূত্থান পরবর্তী সময়ে ডায়াসপোরা কমিউনিটির এই অংশকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে স্মরণ করতে চাই উল্লেখ করে, নতুন বাংলাদেশ গঠনে তাঁদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন এবং যারা প্রবাস জীবন কাটিয়েছে তাদের সংসদেও আসা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন
৯ ফেব্রুয়ারি রোববার রাজধানী বাংলামোটরে অবস্থিত সংগঠনটির কার্যালয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির ডায়াসপোরা, কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সারজিস আলম এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটি চারটি মহাদেশ ও ৩০টি দেশের ৭৫ জন প্রতিনিধি নিয়ে কেন্দ্রীয় প্রবাসী কমিটি ঘোষণা করে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের একটি ধারণা ছিল যে মেধাবী, শিক্ষিত এবং সৎ মানুষ রাজনীতিতে আসে না। কিন্তু জুলাই বিপ্লব সেই ধারণাকে ভেঙে দিয়েছে। আজ আমরা দেখছি, পেশাদার এবং দক্ষ ব্যক্তিরা রাজনীতিতে এগিয়ে আসছেন, দেশ পুনর্গঠনে তারা অবদান রাখতে চান। এই কমিটিতে আমরা পেয়েছি জ্যোতির্বিজ্ঞানী, উদ্যোক্তা, নিউরোসার্জন, একাডেমিশিয়ান, ডেটা অ্যানালিস্ট, কর্মী, ইমাম এবং ব্যবসায়ী। এদের সবার সংকল্প বাংলাদেশ পুনর্গঠনে অবদান রাখা।
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থান পূর্ববর্তী সময়ে খুনি হাসিনা মিডিয়ার গলা চেপে ধরে রেখেছিল জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘বিভিন্ন এজেন্সি অলওয়েজ নজরদারি করত। তারা নিউজের শব্দ ও বাক্য ঠিক করে দিত। কিন্তু দেশের বাইরে প্রবাসী ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিকেরা সাহস জুগিয়েছেন, খুনি হাসিনার রেজিমের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।’
আমরা যদি উদাহরণ স্বরূপ ইলিয়াস ভাই, পিনাকী দাদা, কনক সরওয়ারের কথা বলি, তাদের মতো এমন অসংখ্য ব্যক্তি ছিলেন; যারা ওই রেজিমের বিরুদ্ধে দেশের বাইরে থেকে কথা বলেছেন এবং এখনো তাদের জায়গা থেকে দেশের জন্য কথা বলছেন। আমরা আমাদের এই ডায়াসপোরার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। নতুন বাংলাদেশ গঠনে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ’
সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে দেশের উন্নয়ন এবং পুনর্গঠনের কাজে যুক্ত করাই এই কমিটির মূল লক্ষ্য বলে নাগরিক কমিটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জানিয়েছে।
পরিশেষে, মূল শিরোনামের নীচে ‘ গণপ্রহরী চায় স্বীকৃতি’ শীর্ষক ‘সাবহেড’ সম্পর্কে বেশী কথা না বলে একটুকু বলতে চা-‘গণপ্রহরী’ আত্মপ্রকাশের স্থান (জন্মস্থান) উন্নয়নের ক্ষেত্রে, সর্বদিক থেকে বৈষম্যের শিকার দেশের উত্তর জনপদের’ গাইবান্ধার; পাশের জেলা বগুড়ার কৃতি সন্তান ছাত্রজীবনে আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রণী সৈনিক, ত্যাগী লেখক-ইউটিউবার পিনাকী ভট্টাচার্য, বিডিআর হত্যার ঘটনাস্থল থেকে তথ্য সংগ্রাহক-বিশিষ্ট সাংবাদিক ড. কনক সরোয়ার,সাহসী কলমযোদ্ধা সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন, অধ্যাপক তাজহাশমী ও কর্ণেল আব্দুল হক প্রমূখ এবং তাঁদের আহবানে আয়োজিত টকশো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারি দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, প্রকৌশলী মিনার রশীদ এবং মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান প্রমুখের বিশ্লেষণমূলক বক্তব্য উল্লেখযোগ্য ও মূল্যায়নের দাবি রাখে।
স্বৈারাচার বিরোধী রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক আন্দোলনরত ইসলামী আন্দোলন, জামাত, নাগরিক কমিটি, গণতন্ত্রমঞ্চ, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টি, গনসংহতি আন্দোলন ও ১২ দলীয় জোট, এলডিপি প্রভৃতি দলের আন্দোলন সংগ্রামকে এগিয়ে নেয়ার ভূমিকা পালনসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব পরিচালিত আন্দোলনকে বেগবান করে সফল গনঅভ্যূত্থান সংঘটিত করার ক্ষেত্রে মাঠে থাকা অগ্রণী সৈনিকদের মতোই ভূমিকা পালন করেছেন। এ জন্য তাঁদের পরিবার পরিজন মিথ্যা মামলায় হয়রানি হয়েছেন। তাঁদের ত্যাগ তিতিক্ষায় মূল্যায়ন এবং যথাযথ মর্যাদানের স্বীকৃতির জন্য আহবান জানিয়েছেন। তাঁদের পরামর্শ দেশকে এগিয়ে নিবে বলে মনে করি।
তন্মধ্যে, প্রবাসী জীবন থেকে মাতৃভূমিতে ফিরে এসে দেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালনে মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়েছেন। দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান এবং মেজর জেনারেল (অব:) ফজলুর রহমান। ঊল্লেখিত যোদ্ধারাসহ নাম জানা-অজানা যোদ্ধাদেরও যথাযথ মূল্যায়ন আবশ্যক। সেই সাথে ড. কনক সরোয়ার, ইলিয়াস হোসেন এবং ভারতের হুমকির মুখে জীবন নাশের আশঙ্কায় থাকা পিনাকি ভট্টাচার্যসহ এহেন ভূমিকা পালনকারীদের নিরাপত্তা এবং তাঁদের দেশের বাড়িঘর ও স্বজনদের নিরাপত্তা বিধানে, সংশ্লিষ্ট এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীসহ প্রশাসনকে অবহিত করতে, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণও করা যাচ্ছে।
