Thu. Jul 10th, 2025
পুড়ে যাওয়া মনুষ্যত্বের কবিতা

–আল মাহমুদ

পুড়ে যাওয়া মনুষ্যত্বের কবিতা। গত কয়েকদিন ধরে আমাদের চিরচেনা এই পৃথিবী

এমন এক জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে, যেখানে মানুষ আর ভালোবাসার কথা উচ্চারণ করে না।

তবে কেউ কিছু না বললেও যুদ্ধের পরিণতি কালো মেঘের মত আকাশে গুমোট বেঁধে আছে।

প্রেম, আকুতি ও মনুষ্যত্বের বোমার ধোঁয়ায় কালো কয়লা হয়ে গিয়ে ইতস্তত ছড়িয়ে পড়ছে।

মানুষের উচ্ছেদ কোন ব্যাপার নয়। কিন্তু মনুষ্যত্বের উচ্ছেদ আর কি কি উপায়ে সম্ভব

তা কেবল ভবিতব্যই বলে দিতে পারে।

আমার ধারনা বোমা ফুল ফুটানো বন্ধ করতে পারে না। বসন্তের আগমন

কিছুকাল বোমার শব্দে অবরুদ্ধ হয় বটে, তবু পুষ্পের ঋতু ভীতত্রস্ত কোকিলের মত

ডাকতে ডাকতে হরিৎপ্রান্তরের খোঁজে পালিয়ে বেড়ায়। আমার বিশ্বাস যেখানে

ফুল ফোটে সেখানে ফেরারী প্রেমের গান কেউ না কেউ গেয়ে উঠবেই।

ধ্বংস দেখে তোমার দৃষ্টি এত উদাসীন কেন? তোমার রক্তবর্ন মুখ এতটাই

ফ্যাকাসে হয়েছে যে মনে হয় নারীরা এর আগে মানুষ জাতির বিনাশে

ধ্বংস স্তুপের উপর আর পা তুলে দাঁড়ায়নি। তুমি তো জান, আমি একদা

ধর্মের কথা বলতাম। কিন্তু আমি যাদের ধর্মপ্রাণ মানুষ বলে ভাবতাম

আজকাল দেখি তাদের কোন চেহারা নেই, অতীতে কখনও ছিল কিনা জানিনা।

আমি তো নূহনবীর জাহাজেও ছিলাম, তুমিও ছিলে। ভাব, জুদি পর্বতের চূড়ায় যেদিন

আমাদের জাহাজ নোঙর ফেলেছিল, তখন পৃথিবি বলে কিছু ছিল না। শুধু

জলমগ্ন মৃত্যু ছাড়া আমাদের কপোতটি তার ঠোঁঠে একটিমাত্র জলপাইয়ের কূঁড়ি

নিয়ে ফিরে এসেছিল। আমরা আনন্দে সিজদায় পড়ে গিয়েছিলাম। তাহলে

পৃথিবী আছে, সেটা ছিল জলের মারণ। এখন দেখ ধ্বংসের আগুনে

এবং কালো ধোঁয়ায় পৃথিবী মগ্ন হয়ে আছে। আমাদের হাতে কোন গেরুবাজ

কপোতও অবশিষ্ট নেই। তাহলে এসো আমরা আমাদের আত্মাকেই অগ্নি

তরঙের উপর পাখা মেলে উড়ে যেতে অনুুপ্ররোচনা দিই।নিশ্চয় পৃথিবীর কোথাও

না কোথাও জলপাইয়ের কচি দুটি পাতা তারা তাদের ঠোঁঠে নিয়ে ফিরে আসবে।

[বি:দ্র: ২০০২-২০০৫ সময়কালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধেয় খ্যাতনামা কবির আলোচিত কবিতাটি নতুনদের অবগতির জন্য পুরানো ফাইল থেকে।]

আরও পড়ুন- সুকান্ত : কবি ও মানুষ

মা-বাবার প্রতি ভালোবাসা (Love to Mother & Father)

কবিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *