Sat. Jul 12th, 2025
প্রকৃতি মুক্তি চায় মাদকের গ্রাস থেকেপ্রকৃতি মুক্তি চায় মাদকের গ্রাস থেকে

গণপ্রহরী রিপোর্ট : প্রকৃতি মুক্তি চায় মাদকের গ্রাস থেকে। আর আমরা মানুষ? ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। সৃষ্টিকর্তাই বিশ্ব পরিসরে ছেড়ে দিয়েছে তাঁর সেরা সৃষ্টির মানুষকে। নদী-নালা, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, দ্বীপ-সমুদ্র, গাছপালা, পশু-পাখি, যাবতীয় জলজ প্রাণী ও জীবজন্তুসহ সবকিছুই মানুষের জন্য, প্রকৃতির লীলা খেলায় পরিচালিত হচ্ছে। সেই প্রকৃতি মানুষ সৃষ্টি মাদকের গ্রাস থেকে মুক্তি চায়।

তাহলে কি প্রকৃতিকে বস্যতা স্বীকারে বাধ্য করতেই মাদক ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে মানুষের মাঝে? তারা কারা? যারা ছড়িয়ে দিয়েছে মাদক। যে মাদক প্রকৃতির জন্য হয়েছে হুমকি। বয়বৃদ্ধরা বলেন, কেন প্রকৃতি মুক্তি চাবে মাদকের ছোবল থেকে। জীবনদানের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশটি পাওয়ার সাথে সাথে মদ্যপায়ী-মাদক সেবীর সংখ্যা হঠাৎ করে যেন বেড়ে যায়। তারপরও প্রকৃতি তেমনটা আঁচ করেনি যে, শুধু মানব জীবনে-সমাজ জীবনের জন্য হুমকি হবে না, একদিন তার (প্রকৃতি) জন্যও হুমকি হবে। তবে সন্দিহীন ছিল প্রকৃতি।

বিগত ১৫-১৬ বছরে মাদকের ব্যবহার যেমনি দ্রুত বেড়েছে। তেমনি ব্যবসাও রমরমাভাবে জেঁকে বসে। এটা দেশর আপামর মানুষ অবগত। এও অবগত যে, মাদক দ্রব্যাদির ব্যবসার মূলে সরকারি দলের সাথে সম্পৃক্ত প্রভাবশালী নেতানেত্রীরা অথবা দলের তহবিলদাতারা। সেটা কেন্দ্র থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত। আর এইসব মাদক সরবরাহে দারিদ্রতায় পিষ্ট শিশু-কিশোরদের প্রভাবান্বিত করে অর্থের বিনিময়ে ব্যবহার করেছে, করছে। যারা আজ কিশোর গ্যাংয়ে পরিণত। সমাজ-জীবনকে অস্থির করে ফেলছে। শহর-বন্দর-গ্রাম-গঞ্জ, শহরের পাড়া-মহল্লায় প্রকাশ্য-আধা প্রকাশ্য ও কিছুটা গোপনে চলছে বেচাকেনা।

মাদকসামগ্রী সরবরাহকারি ও বিক্রেতারা নিজেরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। নেশাগ্রস্থদের জন্য সমাজ জীবনকে অস্থিরতাই শুধু ঘিরে ধরেনি, শারীরিক-মানসিকভাবে আক্রান্ত হচ্ছে সহজ-সরল শান্তি প্রিয় মানুষ। ধ্বংসাত্মক নেশা সামগ্রীসহ ধুমপান ও তামাক জাতীয় দ্রব্যাদি দিয়ে মানবজীবনকে যেমন বিষাক্ত করে তুলছে। তেমনি নদ-নদী, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গলসহ প্রকৃতির সবকিছুই হচ্ছে আক্রান্ত। প্রকৃতি হারাচ্ছে তার ভারসাম্য। তাই প্রকৃতি মুক্তি চায় মাদকের গ্রাস থেকে। কারন, মানুষের জন্য প্রকৃতির দানের সবকিছু। মানুষ যদি না বাঁচে প্রকৃতির বাঁচা-মরার অর্থ নেই। গণপ্রহরী করোনাকে কেন্দ্র করে বলেছিল, প্রকৃতি বিনাশীদের নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে প্রকতি ক্ষিপ্ত হয়েই ছুঁড়ে দিয়েছে করোনা (কভিড-১৯)। শত হাজারো মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে।

আমরা একটু দেখে নেই, মাদক ভাবনা প্রকৃতি। প্রকতি প্রতিক্ষণে, প্রতিদিন প্রকৃতিরই বাতাসের শো শো শব্দ যেন প্রকৃতিকে বলছে, নানা ধরণের নানা নামের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়ার মদ্যপায়ী মাদকসেবীদের জীবনের জন্য নেশা সামগ্রীর ধ্বংসত্মক বিষাক্ত বাতাস আর বহন করা যাচ্ছে না, ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। প্রকৃতির আক্ষেপ ‘আমি (প্রকৃতি) মাটির নিচে ও সাগরের অতল গহ্বরে নানা ধরনের মহামূল্যবান সম্পদ বহন করে চলছি আদিকাল থেকে। অথচ নেশা সামগ্রীর বিষাক্ত বাতাস বহন করতে অপারগ হয়ে পড়ছি।

প্রকৃতির আক্ষেপের মধ্য দিয়েই জানান দিচ্ছে, ‘আমার (প্রকৃতি) বহনকৃত মহামূল্যবান সম্পদ কোনো ব্যক্তি ও জাতির জন্য নয়। বরং জাতি-উপজাতি, বর্ণ-বৈষম্যের সাম্প্রদায়িক বিবেচনায় নয়। আমি বহন করছি বাংলাদেশের মানুষের জন্য। বাংলাদেশ এবং এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য। যদিও আমি (প্রকৃতি) মানুষের মতোই জানি, সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী বিশ্ব ব্যবস্থার এক বিশ্ব অর্থনীতির দীক্ষাগুরুর শিক্ষা হচ্ছে অর্থ কামাও, বাড়ি-গারি-সম্পদ করো আর উপভোগ করো। এই দীক্ষা প্রাপ্তরা ছুটছে অর্থ-সম্পদের পিছে। এর জন্য দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতে এবং মানব সমাজের চরিত্র ধ্বংস করতে মাদকাসক্ত করতে দ্বিধা করছেনা। দেখা যাক দীক্ষাগুরুরা কি করছে।

আমরা দেখছি, মাদক ভাবনার প্রকৃতি মুক্তি চায় মাদকের গ্রাস থেকে। এ কারণে প্রকৃতির মূল্যবান সম্পদ ভোগ করার লালসায় খুবই কৌশলে পশ্চিমা বৃহৎ শক্তিসমূহ ও সাম্রাজ্যবাদ হিসেবে নিজেকে জাহির করার পথে এগিয়ে চলা ভারতীয় সম্প্রসারণবাদী শক্তি তাদের লালিত অপসংষ্কৃতির বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়ে রক্তার্জিত এই দেশের মানুষকে মাদকাসক্ত করার অপচেষ্টা করছে। এই অপচেষ্টাকে বাস্তবায়ন করে অর্থ-সম্পদের পাহাড় গড়ে বিদেশের মাটিতে বসবাসের ব্যবস্থা করে জীবনকে উপভোগ করার মানসে ১৫-১৬ বছর থেকে একটানা স্বৈরশাসন চালিয়ে আসছিল। তারা মাদককে না বলার এবং শূণ্যের কোটায় আনার গালভরা বুলি আওড়াতে কম করেনি। কাজের কাজ হওয়ার মধ্যে মাদক যেমনি দেশব্যাপী ছড়িয়েছে, তেমনি রমরমা ব্যবসারও বিস্তৃতি ঘটেছে। মাদকাসক্ত হয়েছে অসংখ্য মানুষ।

মাদক ভাবনার প্রকৃতি বলছে, একটি জাতিকে ধ্বংস করতে এবং তল্পীবাহক দেশে পরিণত করার জন্য নেশার মতো হাতিয়ার ব্যবহার করতে একটু কার্পন্য করেনি, বিদেশী বৃহৎ শক্তিসমূহ ও তার এ দেশীয় দালাল শাসক-শোষক শ্রেণী। তারা নিশ্চিত, যে কোনো মাদকের নেশা চরিত্রকে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানব জীবন নাশ করে। এ জন্য সহজ পথ হচ্ছে অপসংষ্কৃতি ব্যবহার করা। ফলে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে শুধু বিশেষ বিশেষ দিনে নয়, সারা দিবারাত্রি প্রচার প্রবাগান্ডা ছড়ালেও সংশ্লিষ্ট কর্তাদের ছবি প্রদর্শন হয়েছে, হচ্ছে মাত্র। তবে এখনও সময় আছে মাদককে না বলে কঠোর শাস্তির বিধান রেখে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ করাসহ আইনী পদক্ষেপ নিতে হবে দেশব্যাপি। মানবজীবনও রক্ষা পাবে। প্রকৃতিকে বলতে হবে না, প্রকৃতি মুক্তি চায় মাদকের গ্রাস থেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *