গণপ্রহরী ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টার সফল চীন সফর। গত ২৮ মার্চ শ্রক্রবার বেইজিংয়ের পিপলস গ্রেট হলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকটি সফল হয়েছে। অর্থাৎ প্রধান উপদেষ্টার সফল চীন সফর।
প্রধান উপদষ্টোর এই চীন সফরকালে একটি চুক্তি ও ৮টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। পাশাপাশি চীন থেকে ২১০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতিও পেয়েছে বাংলাদেশ। চীনের প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিশেষ চীনা শিল্প অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। তন্মধ্যে রয়েছে মোংলা বন্দর আধুনিকীকরণ, চীনা শিল্পের অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত সহায়তার পরিকল্পনা। এগুলো ইতিবাচক হলেও ভারতের আনুগত্য থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের জনগনের ঐক্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ব্যালান্সের ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও চীনের কাছে প্রত্যাশা ছিল আরও বেশি প্রাপ্তির।
আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে ভারত থেকে আসা তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে ভারত এক তরফা সুবিধা নিয়ে উত্তরাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা নিয়ে হলি খেলায় মেতে থাকছে। যা সমগ্র বাংলাদেশে তার প্রভাব পড়ে আসছে। এ পরিস্থিতিতে বিশেষত উত্তরঞ্চলবাসী বুকভরা আশা নিয়ে ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে তিস্তা সমস্যা সমাধানে চীন প্রকল্প গ্রহন করলে সমস্যার সমাধান হবে।
প্রবাদে আছে, ‘যার ঘা তারই ব্যাথা’। তেমনটাই তিস্তা ভারত থেকে আসা হেতু ভারতের সাথে সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে, কেননা, সফল প্রকল্প গ্রহন করলেও ভারত পানি বন্ধ করে দিলে প্রকল্প সফল হবে না, আপাতত। ভূরাজনৈতিক কারণে ভারত দীর্ঘস্থায়ী এগুয়েমীপনা করতে পারবে না। এসব বিবেচনায় ৫০ বছর মেয়াদি প্রকল্প করার বিষয়টি বিবেচনায় নিলেও চীন প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তবে ভারত, বাংলাদেশ ও আত্মবলিদানে পরিক্ষীত বাংলাদেশের জনগণের ভূমিকা ভালভাবেই জানে ও বোঝে। সেহেতু সমঝোতার সম্ভাবনা থাকছেই।
এদিকে ব্রহ্মপুত্রের উৎসস্থল চীন। আর ব্রহ্মপুত্রকে নির্ভর করে চীনের অনেক প্রকল্প আছে। সেদিক থেকে কম-বেশি উদ্বেগের বিষয় থাকলেও ব্রহ্মপুত্রনদ নিয়ে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে বলা যায়।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকালে বড় দুটি অর্জন হচ্ছে, বাংলাদেশের সরকার প্রধান শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে চীনের সেরা ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত : অন্তর্বর্তী সরকারকে স্বাগত জানিয়ে চীন গত আগস্ট থেকে সরকারের নেওয়া সংষ্কার কর্মসচি ও অগ্রগতির প্রশংসা করেছে। উভয়পক্ষের কৌশলগত সহযোগীতামুলক অংশীদারিত্ব আরও সুসংহত ও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। ঢাকা ও বেইজিং বন্যা প্রতিরোধ ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন, পানি সম্পদের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন, জলবিদ্যুৎ, পূর্বাভাস এবং সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তি বিনিময়ের ক্ষেত্রের সহযোগীতা জোরদার করবে। অপরদিকে, তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুন:সংষ্কার প্রকল্পে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর অংশগ্রহনকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ। এক চীন নীতির প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারও পুনর্ব্যক্ত করেছে। চলমান বিশ্ব ব্যবস্থায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নত পর্যায়ে পৌঁছুক।
আরও পড়ুন- ইলিশ মাছের প্রতি আগ্রহী চীন
