গণপ্রহরী ডেস্ক : বিডিআর হত্যাকান্ড : বন্দীদের মুক্তিসহ পুণর্বহাল দাবি চাকুরিতে। একাত্তুরের মহান মুক্তিযুদ্ধে যে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ইতিহাস গৌরবের। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান শাসনামলে বাহিনীর নাম ছিল-ইপিআর (পূর্বপাকিস্তান রাইফেল); যা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জনের পর পুনর্গঠিত হয় ‘বাংলাদেশ রাইফেল’ নামে। পূনর্গঠিত বাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী হিসেবে যুদ্ধ করা সদস্যরা ছিলেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধাও যোগদান করেছেন নতুন করে এবং নতুনভাবে ভর্তিও করা হয়েছে। সবার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশাত্মবোধ, নতুন উদ্দিপনা ও সাহসীকতা। যা গৌরব অর্জনকারী বাহিনীর বীর সদস্যদের জীবনে ‘কাল’ হয়।
‘বিডিআর হত্যাকান্ড ঃ বন্দিদের মুক্তিসহ পুনর্বহাল দাবি চাকুরিতে’ শীর্ষক প্রতিবেদনের আলোচনা শুরুর আগে মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের এই মাসে মুক্তিযুদ্ধে এই বাহিনীর যাঁরা শহীদ হয়েছেন এবং ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রয়ারি সেদিনের বাংলদেশ রাইফেল (বিডিআর পরবর্তী সময় থেকে বিজিবি) বাহিনীর সদর দপ্তর-পিলখানাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিত ও নাটকীয় বিদ্রোহে যে বীর সদস্যরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের আত্মার প্রতি গণপ্রহরী পক্ষে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আহত এবং স্বজন হারানো শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
ভূমিকাতেই উল্লেখ করা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশাত্মবোধ, নতুন উদ্দিপনা ও সাহসীকতায় উজ্জীবিত এই বাহিনীর বীর সদস্য জীবনে ‘কাল’-হয়েছে এইসব গুনাবলী ও বৈশিষ্ট। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হতো এই বাহিনী এবং সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনেও ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কেননা, বহি:শাক্তির আক্রমণ ঠৈকাতে সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা বর্তমানের বিজিবি যেহেতু দেশ রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত।
সেহেতু দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বসহ জনগণের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাসহ যুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া ও সম্মুখযুদ্ধ পরিচালনাকারি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনেও বিজিবি। এ কারনেও সীমান্তরক্ষী বাহনীকে দুর্বল করার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার ভারতীয় নীলনকশায় ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ পরিচালনায় সংগঠিত হয় বিডিআর হত্যাকান্ড।
ভারতীয় নীলনকশা অনুপাতে পরিকল্পনা এত নিখুতভাবে সাজানো হয়েছে, বিডিআর মহাপরিচলাক দরবার হলে কর্মকর্তাদের বৈঠকের দিন নাটকীয় বিদ্রোহের ছদ্মাবরণে নারকীয় হত্যাকান্ড চালানো হয়, বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায়। বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বরত সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা কর্তব্য পালনকালে নিষ্ঠুর আচরণ ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন। শুধু সেনা কর্মকর্তারাই নিষ্ঠুরতার শিকার হননি। তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও নৃশংসতা ও বর্বরতার হাত থেকে রেহাই পাননি।
সূত্র মতে, দুই দিনের নাটকীয় ‘বিদ্রোহের সাইন বোর্ডের ছদ্মাবরণে পরিচালিত হত্যাকান্ডে ৫৭ জন সেনাকর্র্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে জীবন দিতে হয়েছে। প্রহসনমুলক বিচারে অনেকের শাস্তি হয়েছে, চাকুরিচ্যুত হয়েছেন এবং অনেকে কারাগারে বন্দী জীবন কাটাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারকে তদন্ত কমিশন গঠন ও তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং নিরাপরাধধীদের মুক্তিসহ পূণর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ দেশবাসীর কাম্য।
এদিকে গণপ্রহরী, গাইবান্ধা অফিসে পাওয়া এ বিষয়ক ‘খবর’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান হবি সংক্ষেপিত করেছেন। তাতে ২৭ নভেম্বর বুধবার গাইবান্ধা জেলা শাখা বিডিআর কল্যাণ পরিষদ, জেলা শহরের ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচির শুরুতে এক মিনিটি নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে ও ছাত্রজনতার গণঅভ্যূত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। মানববন্ধন থেকে তাদের সংগঠণের পক্ষে উত্থাপিত ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদের জেলা আয়োজিত অনুষ্ঠানে নায়েক আলতাফ হোসেন মানবন্ধনের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন। ৯ দফা দাবির পক্ষে বক্তব্য রাখেন জেলা সমন্বয়ক নায়েক সি:ভিএম আব্দুর রাজ্জাক এবং সিপাহী ও ক্ষতিগ্রস্থ সদস্যদের পক্ষে আরও বক্তব্য রাখেন-রফিকুল ইসলাম, আসাদুল ইসলাম, ফিরোজা বেগম, ইলিয়াস হোসেন, নজরুল ইসলাম ও মাহফুজ আলম প্রমুখ। ৯ দফার মধ্যে ছিল ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘পিলখানা’ ট্রাজেডি দিবস ঘোষণা, প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল, ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারির বিডিআর হত্যা সুপরিকল্পিত ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ সঙ্গায়িত না করে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করা এবং চাকুরিচ্যুত সকল পদবির বিডিআর সদস্যদের যথাযথ সুযোগ সুবিধাসহ অর্থাৎ বিডিআর সদস্যদের চাকুরিতে পুনর্বহাল ও বন্দিদের মুক্তির দাবিতে ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।
পরিশেষে সরকারের আশুহস্তক্ষেপ ও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে-বিডিআর হত্যাকাণ্ড: বন্দিদের মুক্তিসহ পুনর্বহাল দাবি চাকুরিতে ‘শিরোনামের প্রতি’।
