Sun. Jul 6th, 2025
বিনামূল্যের পাঠ্যসুস্তক শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পাবে কি বিনামূল্যের পাঠ্যসুস্তক শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পাবে কি

গণপ্রহরী রিপোর্ট : বিনামূল্যর পাঠ্যপুস্তক শিক্ষর্থীরা যথাসময়ে  পাবে কি। মাত্র দেড় মাস সময় বাকি শিক্ষার্থীদের নতুন বছরে পদার্পণ করতে। প্রবাদে আছে ‘সময় ও কাল কারো জন্য অপেক্ষা করে না’। প্রবাদটি বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করে বলছে, দেখতে দেখতেই দেড় মাস সময় চলে যাবে। এই সময়ের মধ্যে মানসম্পন্ন বইপুস্তক ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহ করা যাবে কি-না তা নিয়ে ভাবছেন সচেতন অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ভাবনার মূলে রয়েছে অতিতের বাস্তবতা। যে বাস্তবতা শিরোনাম হয়েছে আজকের এই লেখায়।

কারো অস্বীকার করার বিকল্প নেই যে-‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড’। সেই মেরুদণ্ডে যদি কাঠপোকা অর্থাৎ ঘুণে পোকা (ঘুন) যদি মেরুদণ্ডে প্রবেশ করে, সেই মেরুদণ্ড নিয়ে জাতিকে সোজা হয়ে দাঁড়াতে খুব কষ্ট সহ্য করতে হয় এবং জীবনের ঝুঁকিও নিতে হয়। সেহেতু ঘনে পোকা যাতে ধারের কাছে আসতে না পারে এবং মেরুদণ্ড শক্ত-মজবুত থাকে। সেই সাথে জীবনের ঝুঁকি নিতে সোজাভাবে দাঁড়িয়ে রাখতে পারে, জাতির এমন মেরুদণ্ড আবশ্যক। এ জন্য দরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় উপযোগী পাঠ্যপুস্তক। জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যূত্থানের অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দিতে পারছে কি-না প্রশ্নটি থাকলেও সময় বিবেচনায় প্রাধান্য পাচ্ছে বিনামূল্য ‘ র পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পাবে কি।

এদিকে সচেতন অভিভাবক এবং অভিজ্ঞজনদের মতে, ২০১২ সালে ভারতের শিক্ষাক্রমের আদলে পুরোনো শিক্ষাক্রম ভিত্তিক ২০২২ সাল পর্যন্ত দেওয়া আছে বইপুস্তক। এসব বইপুস্তক নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক থাকলেও সেগুলো পরিমার্জনের মাধ্যমে উপযোগী করে মুদ্রনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রশাসন, এনসিটিবি সূত্রে ইতিমধ্যে পরিবেশিত-প্রচারিত পাঠ্যপুস্তক মুদ্রন বিষয়ে আলোচনা, সচেতন মহলে জায়গা করে নিয়েছে। সরকারের সংশ্লিষ্ট এই সূত্রগুলোর সূত্রমতে, পরিমার্জনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। দেশে অনেক মুদ্রন প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ ছাপাখানা রয়েছে। এং যথাশীঘ্র সময়ে পাঠ্যপুস্তকের পাণ্ডুলিপির সিডি মুদ্রনকারীদের দিতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক তুলে দেওয়ার জন্য বিলম্ব মনে হলেও, ডিসেম্বরের মধ্যে মুদ্রনকাজ সম্পন্ন শেষে বইপুস্তক সরকারের হাতে পৌঁছাবে বলে এনসিটিবি মনে করে। যদিও কেও কেও সন্দেহ পোষণ করে মন্তব্য করছেন-এবারও কম বা আগের চেয়ে বেশি সময় বিলম্ব হতে পারে। এদিক থেকেও ‘ বিনামূল্যর পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে  পাবে কি’-প্রশ্নটি দেখা দিয়েছে।

দেশের সচেতন সমাজ অবগত যে, দেশের ছাপাখানগুলোর মধ্যে এবার উন্মুক্ত প্রতিযোগীতায় কার্যাদেশ দেওয়া হবে। তারা ছাপাখানাগুলোতে উন্নতমানের কাগজে ঝকঝকে ছাপা বইপুস্তক সরবরাহ করতে সচেষ্ট হবেন। কেননা, পতিত স্বৈরাচার সিণ্ডিকেটের পছন্দ মতো দেশের গুটি কয়েক প্রেসসহ প্রতিবেশী ভারতে বইপুস্তক ছাপাতো। এতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হতো। এবং দেশের ছাপাখানাগুলো শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক দেওয়ার কাজ থেকে বঞ্চিত হতেন। দেশীয় মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু সরকারের সৎ উদ্দেশ্যকে সফল করতে কাজ করবেন না। তারা কাজ করবেন, বিদেশের নিম্নমানের কাগজে নিম্নমানের ছাপার স্থলে দেশী মুদ্রার বিনিময়ে কাজের জন্য দেশের ছাপাখানাগুলোই উন্নতমানের বইপুস্তক মুদ্রণের জন্য এবং সময়মতো সরবরাহের জন্য নির্ভরশীল প্রতিষ্ঠান। অভিজ্ঞজনদের অনেকের মন্তব্যে বেরিয়ে এসছে সরকার, শিক্ষা প্রশাসন, এনসিটিবি এবং মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোর আলোচিত বিষয়ে সফল হবে-যদি আমলাতান্ত্রিক মারপ্যাঁচের বেড়াজালে আটকে না যায়। তবেই সমস্ত মুদ্রণ কাজ যথাসময়ে শেষ করে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেখার প্রস্তুতি পর্বই শিরোনামের শেষের ‘কি’ শব্দটি বিলুপ্ত করে দিবে। যাতে কেও আর বলতে না পারেন-‘ বিনামূল্যর পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে পাবে কি।

পক্ষান্তরে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সাথে সবাই বলবে-অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা সফল। যদিও বাইপুস্তকে কাঙ্খিত বিষয়াদি অন্তর্ভূক্ত থাকবে না। প্রথমত: সময়ের জন্য। দ্বিতীয়ত: দেশপ্রেমে জাগ্রত করতে শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আত্মবলিদানে বলিয়ান হওয়ার শিক্ষা বিষয়ে লেখা থাকছে না। তবে পতিত স্বৈরাচারের প্রধানমন্ত্রীর উদ্বৃতি ও ছবির স্থানে পরিমার্জন করে রাখা হচ্ছে জুলাই-আগষ্টের গণঅভ্যূত্থানের দেয়ালে আঁকা ছবি বা গ্রাফিতি। যদিও স্বীকার্য যে, আন্দোলন-সংগ্রাম ও গণঅভ্যূত্থানের বিবরনাদী থেকে শিক্ষা ও জানার মধ্য দিয়ে চেতনা বিকাশ, আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ করা বিষয়ে লেখা থাকা বাঞ্ছনীয় ছিল।

পরিশেষে উল্লেখ্য, নতুন বছরের শুরুতে নতুন বইপুুস্তক হাতে পেলে শিক্ষার্থীরা নতুন উদ্যমে স্ব স্ব শিক্ষালয়ে গিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে পারে। এই শিক্ষার্থীরাই জাতির ভবিষ্যত বিবেচনা করে কেও যেন কোন ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পেতে শিক্ষার্থীদের নিরাশ না করেন- এ আশাবাদ গণপ্রহরীর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *