গণপ্রহরী ডেস্ক : বিশ্বে ২০২৪ সালে খাদ্যপণ্যের দাম ২ শতাংশ কমেছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বাংলাদেশে বসে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম কমার খবর বললে বা লিখলেই জনমনে প্রশ্ন বাংলাদেশে খাদ্যপণ্যের দাম কমেছে কি? কারণ অতীতই তার উত্তরে উঠে আসে বিশ্বে খাদ্যপণ্যসহ অন্যান্য পণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে কমেনি।
এক্ষেত্রে দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিগত দেড় দশকের সিন্ডিকেট যেমন নির্মূল হয়নি তেমনি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রিত মোকাম, বাজার, সড়ক ও নৌপথে চাঁদাবাজির দৌরাত্মকে সম্বল করে অধিক মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে চলছে। তবে দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম কমার সাথে দেশেও তা কার্যকর হবে এমন আশাবাদ ভোক্তা জনগণের। এবার দেখা যাক এফএও- এর তথ্যে বিশ্বের খাদ্যপণ্যের দাম।
গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম আগের বছরের তুলনায় ২.১ শতাংশ কমেছে। তবে দাম এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি রয়েছে যা কোভিড-১৯ মহামারীর আগে ছিল, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বলেছে।
গত শুক্রবার প্রকাশিত FAO-এর মাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, FAO-এর সামগ্রিক খাদ্য মূল্য সূচক গত বছর গড়ে 122 পয়েন্টে গিয়ে দাড়িয়েছে। যা ২০২৩ সালের গড়ের তুলনায় ছিল ২.৬ পয়েন্ট বা ২.১ শতাংশ কম। তবে বছরজুড়েই বেড়েছে খাদ্যদ্রব্যের দাম। জানুয়ারিতে সূচকটি ছিল ১১৭.৬ পয়েন্ট, যা ডিসেম্বরে ১২৭ পয়েন্টে বেড়েছে।
এদিকে ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সূচকটি ৬.৭ শতাংশ বেড়েছে। মাংস, দুগ্ধজাত পণ্য ও ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধি এই মূল্যবৃদ্ধির পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
বিশ্বব্যাপী, খাদ্যের দাম পাঁচ বছর আগের তুলনায় গত বছর প্রায় ২৬ শতাংশ বেশি ছিল। Covid-19 মহামারী চলাকালীন বিশ্ব বাণিজ্যে বাধার কারণে খাদ্যের দাম প্রাথমিকভাবে কিছুটা কমেছিল, কিন্তু তারপরে মুদ্রাস্ফীতি এবং বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের কারণে দ্রুত বেড়েছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়, তখন খাদ্যের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। কারণ উভয় দেশই প্রধান গম রপ্তানিকারক। তবে পণ্য পরিবহন সচল রাখার উদ্যোগের কারণে ২০২৪ সালের প্রথম দিকে দাম কিছুটা কমে আসে। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালের মধ্যে গড় খাদ্য মূল্য সূচকের পতন প্রধানত খাদ্যশস্য এবং চিনির কম দামের কারণে। ২০২৩ সালের তুলনায় সিরিয়াল ১৩.৩ শতাংশ এবং চিনি ১৩.৩ শতাংশ কমেছে। উদ্ভিজ্জ তেলের দাম 9.4 শতাংশ বেড়েছে, যা এই পতনের একটি অংশ পুশিয়ে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী খাদ্যমূল্যের এই পরিমিত পতন সত্ত্বেও, বাজারের পরিস্থিতি এখনও ভোক্তাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। আশা করা হচ্ছে যে আগামী বছরগুলিতে, সাপ্লাই চেইন এবং ট্রেডিং সিস্টেমের উন্নতি FAO সূচকে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে।
