স্টাফ রির্পোটার: বিশ্ব ইজতেমা শুক্রবার শুরুর সিদ্ধান্তে ধর্মঘটজনিত কষ্টের শঙ্কামুক্ত। বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাঙ্খিত বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী সাথী মুসল্লীরা অনেকেই দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন রেল ধর্মঘটের কারণে। ট্রেনযাত্রীরাতো ধর্মঘটজনিত কারণেই এক অসহনীয় পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন। সেই সাথে ইজতেমায় অংশগ্রহণ নিয়ে মুসল্লীরা দু:শ্চিন্তা ও শঙ্কায় সময় কাটাচ্ছিলেন। অবশেষে রেলপথ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের উদ্যোগে তাঁর বাসায় ধর্মঘটরত রেলের রানিং-স্টাফদের নেতাদেরসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যেকার সমঝেতা আলোচনায় উত্থাপিত দাবি পূরণের আশ্বাসে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
রেলের রানিং-স্টাফদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করায় সোমবার মধ্যরাত থেকে ২৬ ঘন্টা অব্যাহত ধর্মঘট সফলের জন্য পালিত কর্মবিরতি প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে ধর্মঘটজনিত কষ্টের শঙ্কামুক্ত বিশ্ব ইজতেমা শুরু শুক্রবার সকাল থেকে। ট্রেন চলাচলের নির্ধারিত সময় (সিডিউল) মেনে চলার ক্ষেত্রের বিপর্যয় পুরোপুরি কাটেনি। তারপরও ট্রেন চলাচলে যাত্রীরাও স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ইজতেমার মুসল্লীরাও কষ্টে থেকে মুক্তি পাওয়ার নিশ্চয়তায় পরম সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন।
বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি এবং ট্রেনযাত্রীদের মধ্যে বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে ধর্মঘট এবং যাত্রীদের দুর্ভোগের কথা না ভেবে ধর্মঘট ইত্যাদি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার সমাপ্তি টেনে, সকলের লক্ষ্য কেন্দ্রিক চলাচলে সফলতাই কাম্য। তারপরও বিশ্ব ইজতেমা শুরু এবং রেল ধর্মঘট, দুটি বিষয়েই পরিস্থিতি এবং ধর্মঘটজনিত কষ্টের শঙ্কামুক্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতি সাপেক্ষে শুরু নিয়ে কিছু আলোচনা করতে হচ্ছে।
বিশ্ব ইজতেমা শুক্রবার সকাল থেকে শুরু:
গাজীপুরের টঙ্গীতে দুই ধাপের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপের ইজতেমা ৩১ জানুয়ারি সকাল থেকে শুরু হয়ে চলবে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবং দ্বিতীয় ধাপ ২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। তবলীগ জামায়াত বাংলাদেশ শুরায়ী নেজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এ তথ্য জানান।
মিডিয়া সমন্বয়ক জানান, যেসব জেলার বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহনকারী সাথীরা প্রথম ধাপে অংশ নিবেন সেসব জেলা ও এলাকাগুলো হলো- গাজীপুর, টঙ্গী, ধামরাই, গাইবান্ধা, মিরপুর, নাটোর, মৌলভীবাজার, রাজশাহী, দোহার, ডেমরা, নড়াইল, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, নবাবগঞ্জ, নীলফামারী, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, বরিশাল, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, যশোর, মাগুরা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, শেরপুর, ফরিদপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ফেনী, লক্ষিপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, খুলনা, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, ঝিনাইদহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, পিরোজপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, রাজবাড়ী এবং ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১টি জেলার সাথীরা অংশগ্রহণ করবেন।
২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমায় যেসব জেলা ও এলাকাগুলোর সাথীরা অংশ নিবেন- যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, জয়পুরহাট, সিলেট, সিরাজগঞ্জ, মেহেরপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা, নরসিংদী, সাভার, কিশোরগঞ্জ, কক্সবাজার, নোয়াখালী, গোপালগঞ্জ, ঝালকাঠি, বরগুনা, মাদারীপুর, শরীয়তপুর,খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, নওগাঁ, বান্দরবন এবং ঢাকার একাংশসহ ২২টি জেলার সাথীরা।
দুই ধাপে ইজতেমা ইজতেমা করার কারণ হিসেবে গণমাধ্যমকে মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানিয়েছেন, টঙ্গী মাঠের ১৬০ একর জায়গায় তাদের অবস্থান করাটা কষ্টকর হয়ে যায়। গত কয়েক বছর শুরায়ী নেজামের অধীনে যে সকল ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়েছে, সাথীরা স্থায়ী টয়লেটের ছাদগুলোর উপরে, আশেপাশের ছোট ছোট মাঠগুলোর ভেতরে এবং সড়কে ধুলোবালির ভিতর কষ্ট করে অবস্থান করেছেন। দুই ধাপে ইজতেমা হওয়ার কারণে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব হবে।
তিনি বলেন, “মাঠ এখন পুরোপুরি প্রস্তুত। দ্বীনের ধারক বাহক হচ্ছেন ওলামায়ে কেরাম। ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ভাইয়েরা উলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে থেকেই তাবলীগের মেহনত করতে চান। পুলিশের পক্ষ থেকে যথেষ্ট আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে নিরাপত্তার জন্য ওয়াচ টাওয়ার, সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছেন। সিভিল পোশাকে বিভিন্ন খিত্তায় খিত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করবেন।”
তিনি জানান, ইজতেমা উপলক্ষে আশপাশের জেলা থেকে স্বেচ্ছাসেবীরা ময়দানে কাজ করছেন। ১৬০ একর বিশাল ময়দানে শামিয়ানা টানানো, খিত্তায় খিত্তায় বাঁশের খুঁটি, ছাতা, মাইক, টয়লেট পরিষ্কার, বিদ্যুৎ লাইনসহ মুসল্লিদের বিভিন্ন সুবিধার্থে যাবতীয় কাজ করছেন। ৩০/৪০ জন মাদ্রাসা ছাত্র স্বেচ্ছায় ময়দানের কাজ করছেন।
ময়দানের চারপাশ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, খুঁটি গাঁড়া, পাটের চট টানানো, মাঠে খুঁটি গাঁড়া, শামিয়ানা টানানোসহ নামাজের জন্য ময়দানে লাইন কাটার কাজ করছেন । ইজতেমা ময়দানে মূল বয়ান মঞ্চ তৈরির জিম্মাদার মোশাররফ হোসেন জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত বিশ্ব ইজতেমার বয়ান মঞ্চ তৈরির কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি সময়ের আগেই মঞ্চ তৈরির কাজ সম্পন্ন হবে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবর ইসকান্দার জানিয়েছেন, “আশা করছি প্রতি বছরের মতো এবারও শান্তিপূর্ণভাবে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন। ইতিমধ্যে ইজতেমা ময়দানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার এন এম নাসির উদ্দিন বলেন, “কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে ইজতেমা ময়দান। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার জন্য ময়দান ও আশপাশের এলাকায় ২২৮টি সিসি টিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ড্রোন ক্যামেরা দিয়ে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। ইজতেমা উপলক্ষে সাত হাজার পুলিশ সদস্য পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নিয়োজিত থাকবে। পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে র্যারব ও সেনাবাহিনী।”
ধর্মঘট প্রসঙ্গ: ধর্মঘট প্রত্যাহারের পর বিশ্ব ইজতেমার মুসল্লী ও যাত্রীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে ২৯ জানুয়ারি বুধবার সকাল থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও সিডিউলে বিপর্যয় ঘটায় বুধবারও যাত্রীরা ভোগান্তির মুখে। পক্ষান্তরে কমলাপুর রেল স্টেশনের কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্টাফদের প্রায় ৩০ ঘন্টার ধর্মঘটে ট্রেন বন্ধের কারণে একদিনে ক্ষতি হয়েছে সোয়া কোটি টাকা।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রমতে, মঙ্গলবার দিনভর আলোচনার পরও কোনো সমাধানে পৌঁছতে না পারায় মধ্যরাতে যোগাযোগ ও রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের বাসায় বৈঠকের পর চলমান কর্মবিরতি বা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়া হয়। রাত ৩টার দিরে ট্রেন চলাচল শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়। বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের একজন নেতাও ছিলেন। সারাদেশে কর্মরত রেলওয়ের ১৭শ’র বেশি রানিং-স্টাফদের সংগঠন-‘রেলওয়ের রানিং-স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারীর ইউনিয়নে’র সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তিনি জানিয়েছেন, বুধবার সকাল থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তখন ট্রেনের সূচিতে বিপর্যয় দেখা যায়।
সূত্রমতে, দৈনিক কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টা হলেও রানিং স্টাফদের গড়ে দিনে ১৫ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। সে জন্য তাদের আগে দেয়া হত বিশেষ আর্থিক সুবিধা, যাকে রেলওয়ের ভাষায় বলা হয়, মাইলেজ। মাইলেজ রানিং স্টাফদের বেতনেরই অংশ। প্রতি ১শ’ কিলোমিটার ট্রেন চললে রানিং স্টাফরা মূল বেতনের এক দিনের বেসিকের সমপরিমান টাকা অতিরিক্ত পেত। ৮ ঘণ্টা এক দিনের কর্মদিবস ধরলে রানিং স্টাফদের প্রতি মাসে কাজ হয় আড়াই থেকে তিন মাসের সমপরিমান। তাদের বেতনও সেই ভাবে দেয়া হত।
এ ছাড়াও মূল বেতনের হিসেবে অবসর কালিন ভাতা যা হয়, তার সঙ্গে অতিরিক্ত আরও ৭৫ শতাংশ টাকা বেশি দিয়ে তাদের পেনশন দেয়া হত। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে রানিং স্টাফদের সেই সুবিধা বাতিল করা হয়। এরপর থেকে রেলওয়ের রানিং ষ্টাফরা আন্দোলন করে আসছিল। অবশেষে সোমবার রাত ১২টার পর থেকে তারা আবার ধর্মঘটে যান।
এদিকে কমলাপুর স্টেশনের ব্যবস্থাপক শাহাদাত হোসেন বুধবার সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন, রেলের রানিং স্টাফদের কর্মবিরতির কারণে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় কমলাপুর স্টেশনে প্রায় সোয়া কোটি টাকার মতো আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
তার মতে কমলাপুর স্টেশন থেকে টিকিট বিক্রি থেকে দিনে ১ কোটি ১৫ লাখ থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আয় হয়। ধর্মঘটের কারণে সব ট্রেন বন্ধ থাকায় টিকিটের টাকাও যাত্রীদের ফেরত দিতে হয়েছে। ফলে রেল কর্তৃপক্ষের ওই টাকা ক্ষতি হয়েছে। কমলাপুর থেকে প্রতিদিন ৪২ জোড়া আন্তঃনগর এবং ২৫ জোড়া লোকাল, মেইল, কমিউটার ট্রেন চলাচল করে।
উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজল কবির খান সাংবাদিকদেরকে বলেছেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি। আমি তাদের দাবি পূরণে সক্ষম হব। বিদ্যমান সুবিধা বহাল থাকবে। আগে থেকে যে সব সুবিধা চলে আসছে তা পরিবর্তন হবে না।
এদিকে বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রেলওয়ের রাজস্ব খাতভূক্ত গার্ড গ্রেড-২ সহকারী লোকোমোটিভ মাস্টার গ্রেড-২ পদের মাইলেজ বৈষম্য নিরসন ও নিয়োগপত্রের ১২ এর (ক) ও (খ) পর্যন্ত শর্ত বাতিলের বিষয় মতামত এবং রেলওয়ে কর্মরত রানিং স্টাফদের রানিং ভাতা এবং পেনশন ও আনুতোষিক এর প্রাপ্যতা প্রসঙ্গে বলেছেন, অর্থবিভাগ কর্তৃক ২১-৮-২০২২ তারিখের জারিকৃত পত্রের অনুচ্ছেদটি এবং অর্থ বিভাগের ২৩-১-২০২৫ জারিকৃত পত্রে রানিং অ্যালাউন্স প্রাপ্যতার বিষয় সংশোধন করা হলো।
এতে বলা হয়েছে, রানিং স্টাফে চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে ভ্রমণ ভাতা বা দৈনিক ভাতার পরিবর্তে রেলওয়ের এ্যাস্টাবলিশমেন্ট কোর্ড এর বিধান অনুযায়ী রানিং অ্যালাউন্স প্রাপ্য হবেন। চলস্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা প্রাপ্য হবেন না। অর্থবিভাগের উপসচিব সৈয়দ আলী বিন হাসান ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছেন।
অপরাধ বিষয়ক আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ গাজী বলেন, যাত্রীদের জিম্মি করে আন্দোলন অমানবিক। এই ধরনের আন্দোলনকারিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষের যাত্রী হয়রানীর জন্য ক্ষতিপূরণ বা জরিমানা দেয়া উচিত বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন- রেলের জমি ও যন্ত্রাংশের মালিক কে?
