Sat. Jul 12th, 2025
ভারত নদীকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেভারত নদীকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে

গণপ্রহরী প্রতিবেদক: ভারত নদীকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশকে অনুগত রাষ্ট্র হিসেবে ব্যবহার করতে ভারত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকায় শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগকে ক্ষমতাসীন করে। এ জন্য বাংলাদেশের ভোটার জনগণকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। শুধু নাটকীয় ভোট চলার দৃশ্য প্রচার করলেই হয়েছে। সম্ভাব্য গণবিক্ষোভের দৃষ্টি পরিবর্তন করতে বন্যার সময় ভারত সীমান্তে নদ-নদীর বাঁধ খুলে দেয় আর শুকনার মৌসুমে সবগেট বন্ধ রেখে নদী শুকিয়ে দেয়।

এইতো গত ডিসেম্বরে শেষ সপ্তাহে গণপ্রহরীর বিশেষ প্রতিনিধি স্বপন চৌধুরীকে তিস্তাপারের মানুষ মৌসুমের শুরুতেই শুকিয়ে কাঠ হওয়া তিস্তাকে দেখিয়ে কত না আক্ষেপের কথা জানান। তাঁরা বলেন, তিস্তায় পানি, মাছ কেনোটাই নাই উল্লেখ করে আঞ্চলিক ভাষায় বলেন, তিস্তা নিজেও মইরছে (মরছে), হামাকও (আমাদের) মারছে। তার জন্যইতো হামার (আমাদের) দিন কাটে খায়া, না খায়া।

উপরোক্ত পরিস্থিতির সাথে যেভাবে ভারত নদীকে ভূরাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। সে নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে কারযকর ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যাচ্ছে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের চারপাশে ভারতের প্রায় পঞ্চাশটি বাঁধ, ব্যারেজ ও জলবাহী অবকাঠামো রয়েছে।। যার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে নদীর পানির ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত করছে। মূলত ভারত নদীকে ভূ-রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। নদীগুলির ক্ষেত্রে ভারত একটি অবিশ্বস্ত বন্ধু। নদী নিয়ে ভারতকে বিশ্বাস করা যায় না। তাই বাংলাদেশকে পানির জন্য ভারতের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে স্বাবলম্বী হতে হবে। 

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫০টিরও বেশি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। তবে এসব নদীর পানির ন্যায্য অংশ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তিতে ভারতের আগ্রহ খুবই কম। যা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। তাই ভারতের ওপর নির্ভর না করে বর্ষাকালে পানি ধরে রাখার জন্য ব-দ্বীপ প্রকল্প গ্রহণ করা উচিত। 

শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে নদী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা ‘তরী’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীর পূর্ব তীরে কাশীনগর এলাকায় নদী রক্ষার স্লোগান নিয়ে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী আরও বলেন, ভারত ব্রহ্মপুত্রের পানি তার পশ্চিমাঞ্চলে স্থানান্তর করতে চায়, যা বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক। ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকারী নদীগুলোর বিপুল পরিমাণ পানি বঙ্গোপসাগরে জমা হয়। বর্ষাকালে এসব নদী দিয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার ঘনমিটার পানি প্রবাহিত হয়। তবে গ্রীষ্মকালে ওই সব নদীগুলোর ৫০ শতাংশ পানি বাংলাদেশে আসে। ভারত গ্রীষ্মকালে জল দেয় না, উল্টো তারা গঙ্গা থেকে জল নেয়। বাংলাদেশ যখন বেশি প্রয়োজন তখন কম পানি দেয় এবং কম পানির প্রয়োজনে বেশি পানি দিয়ে জটিলতা সৃষ্টি করে।

তিনি বলেন, সিলেট ও ​​ফেনীর বন্যা তার প্রমাণ। আর ভারত এগুলোকে ভূ-রাজনীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।

এ সময় তিনি বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সারাদেশে নদী দখল ও দূষণ বন্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।। তরী আহ্বায়ক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে নদী সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ও লেখক আমিন আল রশিদ, বাংলাদেশ নদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনির হোসেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট এম. সোহেল রানা।

আরও পড়ুন

তিস্তা নদী মৌসুমের শুরুতেই শুকিয়ে কাঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *