গণপ্রহরী ডেস্ক ঃ মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ পড়ছেন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা উল্লেখ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধ না করে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়াটা একটা বড় অপরাধ। যখন আদালতের কাছ থেকে এই বিষয়টি নির্ণয় করা হবে তখন সনদ বাতিল এবং শাস্তির ব্যবস্থা করবো তাদের। এইসব ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নাম প্রত্যাহারের জন্য সুযোগ দিতে চিন্তা করা হচ্ছে সাধারণ ক্ষমার। ১১ ডিসেম্বর বুধবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, অনেক অভিযোগ আছে যে, মুক্তিযোদ্ধা নয় কিন্তু অনেকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন, হয়েছেন গেজেটভুক্ত ও গ্রহণ করছেন নানা ধরণের সুবিধাদি। আমার মতে জাতির সাথে এটা একটা প্রতারণা। এটা কোনো ছোটখাটো অপরাধ না, অনেক বড় ধরণের অপরাধ। যখন এ বিষয়টি আদালতের কাছ থেকে নির্ণয় হতে তখন সনততো বাতিল করবোই এবং শাস্তিরও ব্যবস্থাও করবো। এর জন্য যেন প্রয়োজনীয় শাস্তি ভোগ করে।
ফারুক ই আজম বলেছেন, যারা অমুক্তিযোদ্ধা এখানে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হয়েছেন যাচাইবাছাই প্রক্রিয়ায় আমরা সুনির্দিষ্ট করতে পারলে একই রকম বিষয় হবে তাদের ব্যাপারে।
তিনি আরও বলেন, ৩-৪টা তালিকা আছে আমাদের হাতে। অনেক ধরনের নীল তালিকা, লাল তালিকা, নানা ধরণের তালিকা, ভারতীয় তালিকা। এখানে বিভিন্ন ধরনের মুক্তিযোদ্ধার তালিকা আছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লক্ষ করা যাচ্ছে, অনুরাগের বশে বা আত্মীয়ের বশে, বা অন্য কোনো ভাবে অনকে মানুষকে মুক্তিযোদ্ধা করা হয়েছে। তাদেরকে চিহ্নিত করতে সময়তো একটু লাগবেই। কেননা, আমরা চাই না যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তাদের যেন মর্যাদা ক্ষুন্ন না হয় বা তারা যেন অসম্মানিত না হন। তাদের মর্যাদাকে অক্ষুন্ন রেখেই সম্পন্ন করতে হবে বাকি কাজ। এটা একটা দুরূহ কাজ হবে আমাদের জন্য। প্রচেষ্টা রাখছি আমরা। এই ক্ষেত্রেও সফলতা আসবে আমাদের।
মুক্তিযোদ্ধা উপদেষ্টা বলেন, হয়তো আমরা একটা ইনডেমনিটিও দেব। যেসব অমুক্তিযোদ্ধা অবৈধভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, স্বেচ্ছায় যেন তারা এখান থেকে চলে যান। তারা যতি চলে যান হয়তো সাধারণ ক্ষমাও পেতে পারেন তারা। তিনি আরও উল্লেখ করেন আর সেটা যদি না হয়, যা আমরা বলেছি যে এই প্রতারণার দায়ে তাদেরকে আমরা অভিযুক্ত করবো।
১২ বছর ৬ মাসের চেয়ে কম বয়সী ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত রয়েছেন। তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স ১২ বছর ৬ মাস নির্ধারণ করা আছে।
মন্ত্রণালয় থেকে ভাতা পায় এমন মোট বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৪ জন। তার মধ্যে বীরাঙ্গাণা হচ্ছেন ৪৬৪ জন। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৫ হাজার ৮৯৫ জন। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা হচ্ছে ৫ হাজার ৩৩৩ জন এবং ৩৬৮ জন হচ্ছেন খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা। সব মিলিয়ে ভাতাপ্রাপ্ত মোট মুক্তিযোদ্ধা হচ্ছেন ২ লাখ ৮০ হাজার ৫০ জন।
এক প্রশ্নে উত্তরে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম সাংবাদিকদের বলেন, রাজাকারের কোনোও তালিকার ফাইল পাওয়া যায়নি। এ নথি নেই মন্ত্রণালয়েও।
