Mon. Jul 7th, 2025
শেখ হাসিনা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় মামলা দায়েরছবি : সংগৃহিত। প্রতিকি ছবি

সুন্দরগঞ্জ থেকে রেহেনা বেগম: শেখ হাসিনা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় মামলা দায়ের। গত ১১ নভেম্বর সোমবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কিসামত হলদিয়া গ্রামের বাসিন্দা ওহেদুর রহমান আদালতে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন। দায়েরকৃত মামলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন পুলিশ সুপার কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগের সভাপতি, সম্পাদকসহ মোট ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলাটি গাইবান্ধা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে  দায়েরের পর আদালত ইনভেস্টিগেশন অব পুলিশ ব্যুরো (পিবিআই)-কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃত্বে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রজনতার মিছিলে গুলি করা হয়। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ওহেদুর রহমানকে হত্যা প্রচেষ্টার উদ্দেশ্যে গুলি করলে বাদী ওহেদুর গুলিবদ্ধ হন।

যখন মিছিলটি গাইবান্ধার শহরের ডিবি রোড হয়ে গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী রোডস্থ সার্কিট হাউসের উদ্দেশ্যে এগিয়ে চলতে থাকে। জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও পার্শ্ববর্তী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামন দিয়ে সার্কিট হাউস অভিমুখে এগিয়ে চলছিল এ সময় আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মতে পুলিশ সুপারের সরাসরি নির্দেশে তৎকালীন কর্মকর্তা পরিচালিত পুলিশ বাহিনী সরাসরি মিছিলের ওপর গুলি চালায়। এতে বাদীসহ অনেক ছাত্রজনতা গুলিবিদ্ধ হন। বাদী ওহেদুর রহমানের শরীরে মোট ৯টি বুলেট লাগে, এবং তাকে তাৎক্ষণিকভাবে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

বাদী আরও অভিযোগ করেন, হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন সভাপতির নির্দেশক্রমে আওয়ামী লীগের ৫-১০ নম্বর আসামিদের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন অজ্ঞাত সন্ত্রাসী হাসপাতালে আক্রমণ করে এবং আহত ছাত্র জনতাকে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত করে। পরিস্থিতির কারণে ভয়ে বাদী চিকিৎসা অসম্পূর্ণ রেখেই হাসপাতাল ত্যাগ করতে বাধ্য হন। পরবর্তীতে ডা. তাজুল ইসলামের চেম্বারে একটি বুলেট অপসারণ করা হয়। শারীরিক সুস্থতা অর্জনে সময় লাগায় মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে বাদী জানান। দায়েরকৃত মামলাটি অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বাদীপক্ষে পেশ করেন অ্যাডভোকেট রেজওয়ানুল হক।

শেখ হাসিনা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় মামলা শীর্ষ্ক খবর মতে, মামলায় আসামি করা হয়েছে ১. শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ২. কামাল হোসোন, গাইবান্ধার তৎকালীন পুলিশ সুপার ৩. মো. ইব্রাহিম, গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ৪. মো. মাসুদ রানা, অফিসার ইনচার্জ, গাইবান্ধা সদর থানা ৫. আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ৬. মোজাম্মেল হক মন্ডল, সাধারণ সম্পাদক, জেলা আওয়ামীলীগ ৭. সরদার সাঈদ হোসেন লোটন,  গাইবান্ধা জেলা যুবলীগ সভাপতি ৮. শাহ আহসান হাবীব রাজীব, সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগ, গাইবান্ধা জেলা, ৯. আসিফ সরকার, গাইবান্ধা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ১০. গাইবান্ধা জেলা সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মোসাদ্দেক (মামুন)। মামলাটিতে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০জনকে আসামী করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাজনৈতিক বিরোধের কারণে বাদীর উপর পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানো হয়েছিল। ওহেদুর রহমানসহ অনেক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। এজাহারে আরো উল্লেখ করা হয় যে, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট গাইবান্ধায় সরকার বিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার নির্দেশে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ছাত্রজনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। সে প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধায় মামলা।

উল্লেখ্য, অভিযোগ দায়েরের পর সুপ্রিম কোর্টের একজন অভিজ্ঞ বিচারক পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *