Sat. Jul 12th, 2025
সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনাচার হয়েছে: আসিফ নজরুলসুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনাচার :হয়েছে আসিফ নজরুল

গণপ্রহরী ডেস্ক : সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনাচার হয়েছে উল্লেখ করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে অনাচার হয়েছে। এ জন্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি নিয়োগের আদেশ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমি চূড়ান্ত খসড়া করব।

28 ডিসেম্বর শনিবার বিকালে রাজধানীর কলেজ রোডে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৪’ বিষয়ক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারকদের ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করতে পারলে দেশের যেকোনো সরকার সব ধরনের মানবাধিকার হরণ করার অবাধ সুযোগ পাবে। এই কাজটি গত ১৫ বছর ধরে করা হয়েছে। মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত, মানুষকে নির্যাতনের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে হাইকোর্ট।

আইন উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের ঘটনা দেখেছি, আপিল বিভাগ খাদিজাকে বিনা বিচারে কারাগারে রাখার জন্য দিনের পর দিন জামিনের শুনানি পিছিয়ে দেন।। ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে। এই হাইকোর্টের অনাচার, বিচার ব্যবস্থার মাধ্যমে নিপীড়নের সবচেয়ে সমস্যাযুক্ত বিধান হলো বিচারক নিয়োগ আইন। উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগের নামে যা হয়েছে তার অনেক উদাহরণ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের পরীক্ষায় ফেল করা বিচারক নিয়োগ পেয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ফেল করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেননি। আইন কলেজ থেকে পাস করেন। এমন বিচারক আছেন যারা কখনো আদালতে প্র্যাকটিস করেননি। ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে।

আলোচকদের মতামত প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, সবাই বলেছেন, হাইকোর্টে নিয়োগ ভালো হতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থা কাজ করছে না। আমাদের কিছু করতে হবে। এটা আইনের মাধ্যমে। সাংবিধানিকভাবে এবং আরও দক্ষতার সাথে কীভাবে এটি করা যায় তার পরামর্শ দেন তিনি। আমি প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আমরা একটি চূড়ান্ত খসড়া করব।

বিচারক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শুধু হাইকোর্টের বিচারক নিয়োগে অবিচার নয়, আপিল বিভাগে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রেও অবিচার, বেঞ্চ গঠনে অবিচার এবং বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রেও অবিচার রয়েছে। । আমি প্রতিটি বিষয় সমাধান করার চেষ্টা করব। অন্তত কিছু ভালো আইন করে যাই । নিয়োগ দিয়ে যাই ভালো কিছু।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ প্রসঙ্গে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের বারবার বলা হচ্ছে হাইকোর্টের বিচারপতিরা এক পক্ষের অনুগত ছিলেন। তাদের অনেকেই অপরাধ করেছে। 90% ক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল। বারবার বলা হয়েছিল কয়েকজন বিচারপতি নিয়োগ দিতে। আমরা আইনের জন্য অপেক্ষা করতে পারিনি। বিচারিক ক্যু পর্যন্ত শঙ্কা ছিল। তাড়াতাড়ি করতে বললেন। এ জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভুলত্রুটি থাকতে পারে। আমরা সবাই মিলে এটা করেছি। এতে প্রধান বিচারপতির কার্যালয়, অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়সহ তিনজন উপদেষ্টা জড়িত ছিলেন। আমাদের ভুল হতে পারে। কিন্তু আমাদের সময় ছিল না। পরের বার যখন নিয়োগ হবে, আমরা যদি ভালো আইন করতে পারি, ৩০-৪০ জন বিচারক নিয়োগ দিতে পারি, তারা ২০-৩০ বছর দেশের সেবা করবে। কিছু না করার চেয়ে কিছু করা ভালো।

পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামীম হাসনাইন ও বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সারা হোসেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রফিকুল ইসলাম প্রমুখ মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *