গণপ্রহরী ডেস্ক: সেন্টমার্টিন দ্বীপ বন্ধ থাকবে ৯ মাস। ২ ফেব্রুয়ারি শনিবার থেকে সেন্টমার্টিনে যে কোনো প্রকার পর্যটক যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা শুরু হলো। আগামী ৯ মাস কোনো পর্যটক দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন না। বন্ধ থাকবে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলও।
সরকারি বিধিনিষেধের কারণ হিসেবে স্থানীয় প্রশাসন এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর করছে। ডিসেম্বর মাস এর আগে পর্যটক যাতায়াত সীমিত করা হয় সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াতে নিবন্ধনের নিয়ম চালু করে।
‘‘ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির’’ (ইয়েস) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট-মুজিবুল হকের নেতৃত্বে সম্প্রতি সেন্টমার্টিন দ্বীপ ঘুরে এসেছেন পরিবেশবাদীদের ১০ সদস্যের একটি দল।
দলটি জানান, ‘‘পর্যটক সীমিত করায় দ্বীপে যত্রতত্র ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের ব্যবহার, নানাভাবে পরিবেশ দূষণ এবং নির্বিচারে প্রবাল-কোরাল-পাথর উত্তোলন কমে এসেছে’’।
মুজিবুল হক বলেন, ‘‘সেন্টমার্টিনে যে অবৈধ হোটেল-রিসোর্ট নির্মিত হয়েছে বা হচ্ছে, তা প্রশাসনের কারও অজানা নয়। তারপরও আশার বাণী হচ্ছে-গত ডিসেম্বর থেকে পর্যটক সীমিতকরণের পর সেন্টমার্টিন দ্বীপে একদিকে যেমন ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের ব্যবহার কমে গেছে, অন্যদিকে দ্বীপের সার্বিক পরিবেশ-প্রতিবেশ অনেকটা দূষণমুক্ত হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা একটা পরিচ্ছন্ন দ্বীপ পাচ্ছেন। যা সরকারের পাশাপাশি পরিবেশবাদীদের একটা বড় সাফল্য’’।
তিনি আরও বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত বন্ধের পর দ্বীপ নিয়ে কী কী পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তা নিয়ে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে’’।
জানা গেছে
জানা যায়, সেন্টমার্টিন দ্বীপ সুরক্ষায় পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকাকালীন সময়ের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করবে । এই কর্মসূচিতে দ্বীপটিকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করা হবে। তারপর প্লাস্টিক বোতলসহ ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের মাধ্যমে অভিযান চালানো হবে। এই কর্মসূচির বাইরে পর্যটক নিষেধাজ্ঞার সময়ে বিশেষ প্রকল্পের মধ্য দিয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বিশুদ্ধ খাবার পানি উৎপাদন ও সরবরাহের করার জন্য। তাছাড়া বর্জ্য থেকে উৎপাদন করা হবে বিদ্যুৎ । একই সাথে জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করার পরিকল্পনাও রয়েছে প্রশাসনের।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, ‘‘ ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এরপর কেউ সেন্টমার্টিন যাচ্ছেন কি না, তা নজরদারিতে রাখা হবে।”
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে সেন্টমার্টিন দ্বীপ সুরক্ষার কর্মসূচি। পর্যটক যাতায়াত বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের বিকল্প জীবিকার বিষয়টিও ভেবে দেখা হচ্ছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত গত দুই মাসে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছেন ১ লাখ ২০ হাজার পর্যটক। এ সময় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণের আগে অনলাইনে নিবন্ধন কাজ সম্পন্ন করে ট্রাভেল পাস নিয়ে পর্যটকদের সেন্ট মার্টিন যেতে হয়েছে । পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল, “নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা দ্বীপটিতে দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসবেন। তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের জন্য সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ ও সেখানে রাত যাপনের সুযোগ রাখা হয়।”
