Thu. Jul 10th, 2025
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্যসভা-সমাবেশ

গণপ্রহরী প্রতিবেদক : সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য। প্রস্তাবটি দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যদিও বলতে বলা যায়, সবেমাত্র কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসনের পতন হয়েছে। তিন মাস পূর্ণ হয়নি এখনও, অন্তর্বর্তী সরকারের। প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সংষ্কার কাজ করছে অন্তর্বর্তী সরকার। গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠায় সব করণীয় কাজ অন্তর্ববর্তী সরকারের ক্ষমতার আওতায় পড়ে না।

ইতিমধ্যে বেশ কিছু সংস্কার পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে চলছেন। কিন্তু পরবর্তিতে রাষ্ট্রীয় ও সমাজ জীবনে মানুষের আকাঙ্খা অনেক। যার সবই পূরণ করতে নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন। তারপরও অন্তর্বর্তী সরকার জনআকাঙ্খা প্রেক্ষিতে দাবিদাওয়া নিয়ে সড়কে সভ-সমাবেশ করছেন। অবস্থানও নিচ্ছেন রাজপথে। এত এতে দীর্ঘ সময় যানজট থাকছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে সড়কে সভাসমাবেশ না করে লিখিত আবেদন আহ্বান করেছেন। এবং রাজধানীর শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা-সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আমরা মনে করি, সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য। এবং নাগরিক জীবনে জনভোগান্তি লাঘব করতে সরকারের সিদ্ধান্ত  ও প্রস্তাব যৌক্তিক ও সময়োপযোগী।

অন্তর্বর্তী সরকারসহ গণতান্ত্রিক দলগুলো এবং সচেতন সমাজ বিশ্বাস করে সভাসমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার। কেননা, স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর, ছাত্র জনতার গণঅভ্যূত্থানে অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু ক্ষমতায়। সেহেতু ছাত্র শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ ও চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তাদের বঞ্চনার প্রতিকার পেতে চান, সরকারের কাছে। তাঁদের চাওয়া যৌক্তিক এবং তা গণতান্ত্রিক অধিকারও। প্রতিকার যারা চান বা দাবীদাওয়া যাঁরা জানাতে চান, তাঁরা শহরের কোন স্থানে দাঁড়িয়ে জানাবেন ও জানাচ্ছেন, তা নিয়েও ভাবতে হবে।

কেননা আমরা সবাই সবার জন্য অর্থাৎ মানুষ মানুষের জন্য। সে বিবেচনায় আমাদেরকে এভাবেও ভাবতে হবে যে, আমরা বঞ্চনার প্রতিকার হিসেবে দাবিদাওয়া নিয়ে সমাবেশ করবো প্রয়োজনে বাধ্য হচ্ছি। কিন্তু তা যদি অন্য মানুষের অসুবিধা করে? তাহলে তা যৌক্তিক হবে না, যদিও দাবীগুলো যৌক্তিক। এ জন্য নিরাপদ স্থানে আমরা একত্রিত হয়ে সরকারের কাছে দাবি পেশ করতে যেন পারি। সেদিকেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে জনস্বার্থে।

এক্ষেত্রে, শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অবশ্যই যথার্থ। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র শাহবাগ। যেহেতু অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচ্য সেহেতু সড়কটি বন্ধ করে দিলে পুরো ঢাকা শহর যেন স্থবির হয়ে যায়। শুধু শাহবাগে নয়। এইতো সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ন্যায়সংগত আন্দোলনে রাজধানীর একাংশ অচল হয়ে পড়ে।

একইভাবে, সচিবালয়, প্রেসক্লাব এবং প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনের সড়কেও সমাবেশ মিছিল হচ্ছে। এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে সমাবেশ মিছিল করতে দেখা যায়। এর ফলে সৃষ্ট যানজটে শুধু নগরবাসী নয় আন্দোলনকারীদের যাতায়াত করতেও দুর্বিসহ ভোগান্তি নেমে আসে জীবনে। তাই দাবি জানাতে অন্যদের দুর্ভোগের মুখে ঠেলে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনার দাবি রাখে। অন্তর্বর্তী সরকার সবার সুবিধার্তে শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দীতে সামবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য বলে বিবেচনা করেই সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য
সভা-সমাবেশের কারণে সৃষ্ট যানজট

প্রসঙ্গত, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক অর্থাৎ মানুষের জীবনমরনের সন্ধিক্ষণে মানুষ চিকিৎসার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঢাকায় আসেন। সেই চিকিৎসা সেবার অন্যতম প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় এবং বারডেম হাসপাতাল, শাহবাগে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার অন্যতম সড়কও ওই শাহবাগ সড়ক হয়ে। তাই শাহবাগে সভা সমাবেশ নয়। সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেেশর প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য। রাজননৈতিক-সামাজিক-সাংষ্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠন সমূহকেও এ প্রস্তাব বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করতে হবে। তা করতে হবে সাংগঠনিকভাবে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে জনস্বার্থে। অন্যথায় সিদ্ধান্ত কার্যকরে বিশৃঙ্খলা হবে, জনভোগান্তি চলতেই থাকবে। সোহরাওয়ার্র্দীতে সভা-সমাবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য হলেও চ্যালেঞ্জের মুখে থাকবে।

বিশ্বের মধ্যে প্রধানত ঢাকা যানজটের কারনে ধীরগতির শহর। অপরদিকে, সড়ক বন্ধ করে সভাসমাবেশ করা আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর বহু বছরের চর্চায় পরিণত হয়েছে। এও ঠিক যে রাজধানী ঢাকাসহ যে কোন নগর ও শহরে নাগরিক অধিকার ভিত্তিতে প্রতিবাদ জানানো এবং সভাসমাবেশের জন্য নির্ধারিত নিরাপদ জায়গা থাকা অত্যাবশ্যক। রাজধানীর মুক্তাঙ্গান খ্যাত জায়গাটি ব্যবহৃত হতো আগে, সেটাও এখন বন্ধ। এমনিতেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বিরাজমান। সবদিক বিবেচনা পর্যালোচনা করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবেশ ও প্রাণ প্রকৃতির যাতে কোনে ক্ষতি না হয় এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাধীনে সভা সমাবেশ করা যায় তার নিশ্চিত ব্যবস্থা করতে হবে। সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশের প্রস্তাব গ্রহনযোগ্য বিবেচিত সকল মহলের কাছে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *