স্বাধীনতা দিবস বাঙালির জন্য একটাই ২৬ মার্চ ।বাংলার স্বাধীনতা দিবস তো একটাই। বাঙলীরও তো তাই। বাঙালী নিজেকে ভারতীয় কিংবা বৃটিশ, আমেরিকান আরো অনেক স্বাধীনতা দিবস করতে পারে, কিন্তু বিশুদ্ধ বাঙালী হিসেবে যে চেতনা আজ পৃথিবীময় বাইশ কোটির (পবিত্র সরকারের হিসাব) চাইতেও বেশি মানুষের ভিতরে ছড়িয়ে আছে, তাদের সকলের সদ্য স্বাধীনতা দিবস এই ছাব্বিশে। তারা যেখানকারই নাগরিক হোক।
এই সত্যটিকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে বাংলাদেশকে পৃথিবীর সকল বাঙালীর হোমল্যান্ড বানাতে হবে, এদেশের ওপর জগৎময় বাঙালীর একটা অধিকার স্বীকার করতে হবে, সেই অধিকারের চেতনাটা ছড়াতে হবে, চর্চা করতে হবে। বাংলাদেশের চুয়ান্ন হাজার বর্গমাইলের ছোট একটা গণ্ডি, কিন্তু বাঙালিত্বেও বিস্তৃতি বলতে গেলে বিশ কোটি বর্গমাইলের এই পৃথিবীর এক-চতুর্থাংশ যে স্থল ভাগ, তার প্রায় সবটা জুড়ে। এখনো যে জায়গায় বাঙালী বসতি গড়ে উঠেনি, অচিরে সে সব জায়গায়ও বাঙালী যাবে, থাকবে-স্থানীয় জীবন ও সংষ্কৃতিতে বাঙালীত্বেও উপাদান মেশাবে মেলাবে।
এসব আসার চিন্তা, অবাস্তব স্বপ্নের কথা নয়। পোল্যাণ্ড নামের দেশটা খুব বড় নয়। পূর্ব ইউরোপের সমাজতন্ত্র-গণতন্ত্রেও খিটিমিটিতে পোল্যান্ড প্রায় হারিয়ে যাবার অবস্থায়। লিখ্ ওয়ালেন্সার জাগরণ স্তিমিত হয়ে গেলে পোল্যান্ড পিছিয়ে পড়েনি। তাদের পোল্যান্ড যে রাজনৈতিক সীমায় সীমাবদ্ধ নয়, তা ছাড়াও যে কত জায়গায়। পোল্যান্ড রুশ সাম্রাজ্যেও বিরাট ভালুকের পায়ের তলায় চাপা ছিল এই সেদিনও। পরাধীনতার বিরুদ্ধে যে গুপ্ত সশস্ত্র প্রতিরোধ সেখানে গড়ে উঠেছিল তাদেরই সিদ্ধান্তে তাদেরই পয়সায় মারি স্ক¬দৌসকা ফ্রান্সে গিয়ে কৃতবিদ্য হয়ে মারি কুরী, মাদাম কুরী হয়ে দু’বার নোবেল পুরুষ্কার পেয়ে ছোট মেয়ে ইরিন এবং জামাত ফ্রেদেরিক-জোলিও নোবেল বাগিয়েছেন জগতে পোল্যান্ডকে শীর্ষে তুলল, সেই পোল্যান্ডকে আর দাবায়া রাখবে কে? সেই পোল্যাণ্ডে যত সমস্যা থাকুক, বাঙালী একটু দেখুক অনাবাসী পোলিশদের সঙ্গে পোল্যান্ডের সম্পর্ক কী।
আরও পড়ুন- শুরুতে গুলিবিদ্ধ ফয়েজ আহমেদের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কথা
আমাদের প্রতিনিয়ত বধ করছে এই চেষ্টা এই চিন্তা যে আমাদের ছোট থাকার মধ্যেই আমাদের জাতীয় সত্তার নিরাপত্তা যেন খুঁজে। এই মানসিক ক্ষুদ্রতা-সংকীর্ণতাই যে আমাদের সর্বপ্রকারে ‘বনসাই’ করে রাখবার কৌশল সে আমরা এখানো বুঝলাম না। সর্বহারার হারাবার কিছু নেই, তার শেকলটুকু ছাড়া- এতো দুনিয়ার মানুষের মুক্তিমন্ত্র। বাঙালীর সংকীর্ণতা হটিয়ে উদার এবং উন্নত হবার পথে বাধাটা কোথায়? বাংলাকে বাঙালীকে ছোট করে এর নিতান্ত হঠাৎ নবাব আপস্টার্ট ধনবান অংশ এবং বিক্রীত আত্মার লুম্পেন পেশীশক্তি বেকারেরা। এই দুই যুক্ত হয়ে বাংলাদেশকে তাদের তাবে রাখতে চাইছে অনন্তকাল। এবং যার জন্য ধর্মকে ব্যবহার করতে কুণ্ঠিত হচ্ছে না। এই ছোট্ট একটা দেশের মানুষকে শত্রুতামূলক বিভাজনে বিভক্ত করছে তারা। বাংলার বাঙালীর আবহমানকালের আহ্বান সবার প্রতি, রবীন্দ্রনাথের ভারত-তীর্থের মত, এই তো ইতিহাস। আজ কেবল আমাদের সকল কপাট আমারা বাইরের জন্য বন্ধ করেছি তা নয়। আমরা ওয়ারওয়ে রাজপথেই খুলে রেখেছি এদশে থেকে কোথাও চলে যাবার জন্য। হয়তো চিরকালের জন্য উৎখাত। দেশটা যে কিভাবে সাতচল্লিশ থেকে কত দ্রুত, কত ছোট হয়ে যাচ্ছে। যাচ্ছে তো যাচ্ছে। এতো স্বাধীনতার পথ নয়। ছাব্বিশে মার্চে তো আমরা ওইরকম একটা মৃত্যুকূপ তৈরি করিনি, আমার সকল মাটির মানুষের, দুর্বল মানুষের, অমুসলিম নানাতর মানুষের এবং শেষ পর্যন্ত আমাদের সকলের নিজেদের জন্যে।
আজ জগতের যেথা যত বাঙালি আছে তাদেরকে একুশে ঠিকই প্রাণে ধরে টানে। ভবিষ্যতের কোন সময় থেকে ছাব্বিশে মার্চও সর্ব বাঙালীকে স্পর্শ করুক। কিন্তু তা হতে হলে যে কেবলই বুকটা বড় করে বাড়িয়ে দিলেই হবে তা নয়। প্রয়োজন, বাঙালীর জন্য আজ প্রথম আয়োজন আত্মানুসন্ধান, আত্মআবিষ্কার। বাঙালীর স্বরূপটি রবীন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রাদি মানবতার ধারায় পাই, কিন্তু সে সকলের উৎসটি সংগুপ্ত রয়েছে এখনো আমদের দূরপল্লী গ্রামে নিভৃত অখ্যাতির ভিতরে। সেই হাজার হাজার বছরে বাঙালীর সেই সংগুপ্ত মধু আহরণ করে, আস্বাদ করতে পারলেই আমাদের আর বড় হবার, উদার উন্মুক্ত হবার কোনই বাধা থাকে না। বরং সেই অমৃতের ভোজে আমরা বিশ্ববাসীকে পেয়ে যেতে পারি, এবং সেটাই আমরা চাই। সেখানেই বাংলাদেশের, বাংলার, বাঙালীর স্বার্থকতা পূর্ণতা। ‘ফিরে চল মাটির টানে’- এই ব্যতিক্রমী মন্ত্রের উদগাতা যে রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং।
ছাব্বিশে মার্চের মুক্তি হবে তখন। সমগ্র মানবেরই মুক্তিদিন হোক না সে। ঠিক যেমন ১৪ই জুলাই বাস্তিল পতনের দিনটি। আর এখন ছাব্বিশের ছবিটি কেমন। বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার মতই। সর্বদা-উপদ্রুত, নিরন্তর, অনিশ্চিত। ঋতু আসে ঋতু যায়, বছর ঘুরে আসে। বাঙালীর দিন কেন ফেরে না? সত্যিকার স্বাধীনতার, বাংলার মানুষের মুক্তির দিন হোক এই ছাব্বিশে মার্চ। পৃথিবীর মানুষ এসে মিলুক এখানে। বাঙালীর সংষ্কৃতির শক্তিই প্রধান শক্তি। বাঙালী কোন কালেই পেশীশক্তির সাধনা করে নাই, সাম্রাজ্য গড়ে নাই। ধর্মপালের সময় বাংলার সীমায় চলে এসেছিল ভারতবর্ষের বহু অঞ্চল। ধর্মপাল বীর ছিলেন। কিন্তু বাঙালী তখন উপমহাদেশের শীর্ষে ছিল সভ্যতা-সংষ্কৃতিতে। তাই ছিল তার প্রবাসের কারণ।
বাঙালীর সংষ্কৃতি প্রসারিত ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওসে। এবং শ্রীলঙ্কার প্রাচীনতম দু’টি ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী সে দেশের মানুষ বাঙালী বিজয় সিংহের বংশধর। বাঙালী মূলে যে অস্ট্রেলয়েড গোষ্ঠির মানুষ, তারা ভারত থেকে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মেলানেশিয়া হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হওয়াই দ্বীপ পর্যন্ত প্রসারিত। আজকের বাঙালীর কূপমন্ডুকতা, অনাহার ও সর্বব্যাপী দারিদ্র্য, সংকীর্ণতা আত্মপরতা যেমন পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের ফল, তেমনি তা অবধারিত ফসল বাঙালীর সাংষ্কৃতিক অবক্ষয়ের। বাঙালীর শিক্ষা নাই, শিক্ষার নামে যে ডিগ্রী পাসের এক মহাদুর্নীতিতে লিপ্ত, নিমজ্জিত। বাঙালীর শিক্ষক প্রকৃত শিক্ষিত নয়, শিক্ষার প্রতি ছাত্রের আগ্রহ সৃষ্টি করতে সে উৎসাহীও নয়-যোগ্যও নয়। বাংলার রাজনীতিক শিক্ষিত নয়। তার দোর্দন্ড প্রতাপ সমাজে শিক্ষার প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি করছে। বাঙালী সচ্ছল উচ্চমধ্যবিত্ত এবং ধনিক শ্রেনীর অপর সংষ্কৃতিমুখী, ছেলে- মেয়েদের বিদেশ পড়িয়ে তাদের হয়তো দক্ষতা বাড়াচ্ছে, মনুষ্যত্ব বাড়াচ্ছে না, তারা অশিক্ষিত থেকে যাচ্ছে, দেশকে না জেনে, হেয় করে, মানুষকে না ভালবেসে। মনুষ্যত্ব সমাজের দান, সমাজের প্রধান ঘটনা ভাষা ও সংষ্কৃতি। তার থেকে বিযুক্ত ব্যক্তি কখনো মানুষ হয় না, মানুষের কাজে লাগে না এবং অবশ্যই সমাজবৈরী হয় সে।
বাংলা ও বাঙালীর এই হতদরিদ্র, লক্ষ্যহীন, উদ্যমহীন দশায় মাত্রই বর্তমান মাসে নেত্রকোনায় আরম্ভ হল জেলা সংস্কৃতি সম্মেলন। এতকাল নগর রাজধানী থেকে উৎসারিত সচ্ছল মানুষের সংষ্কৃতি বাঙালীর একমাত্র সংষ্কৃতি বলে দেশাভ্যন্তরে প্রভাব ফেলেছে। রবীন্দ্রমুখিনতা তথা সাংষ্কৃতিক পুনরুজ্জীবনকে লক্ষ্য করে সেই প্রভাব ছুটেছে চারদিকে। তার মধ্যে স্বীকৃতি ছিল বাংলার শাশ্বত গ্রামীন সংষ্কৃতির। তার প্রতি ঋণের। রবীন্দ্রদৌত্যে পৃথিবীময় বাংলা যে বাণী প্রসারিত হয়েছে তা ঔপনিষদিক ভারতে যতটা তার চাইতে অনেক বেশী বাংলার ভূমিজ আত্মানুসন্ধানজাত প্রত্যয়। মানুষেই মানুষের সীমা, আকাশে কোথাও নয় তো বাংলার এটা বাউলের বাণী। A Man’s a man for a that-বার্নসের অমর পংক্তি যেন বাংলার গ্রাম থেকেই উৎকলিত।
আজ যখন বাংলার তাবৎ শহর-বন্দর-নগর কমার্শিয়াল এনটারটেইনমেন্টের কদর্য জীবনবিমুখী নিম্নমান পণ্যে সয়লাব এবং তা বিপুল বেগে গ্রামীণ দরিদ্রের কুটিপ্রান্তে উপস্থিত, একে প্রতিরোধ বিনা বাংলার জাগরণ অসম্ভব। এবং কোন নেতিবাচক সংগ্রামে এ সুফল দেবে না, যেমন দেয়নি বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রাম। মূলত নেতিবাচক ছিল বলে তা এত সহজে সত্যতা-সংষ্কৃতি স্বাধীনতা বিরোধী তথা মনুষ্যত্ব ও বিকাশ বিনাশী চক্রান্ত দ্বারা উৎপীড়িত আজ। শত্রুরা বাংলার স্বাধীনতাকে আজ খুবলে খাচ্ছে। বাঙালীর ফিরে দাঁড়ানোর একটি ক্ষেত্র আছে। সে তার ঐ গ্রাম। দীন-দরিদ্র হতভাগিনী মা আমার বাংলার গ্রাম। সে কখনো করেনি বঞ্চনা। বাঙালীর পায়ের নীচে এখনো যে জমিটুকু আছে সে তার বৈচিত্র্য-গ্রাম থেকে গ্রামে, অঞ্চল থেকে অঞ্চলে। নগরের থেকে আমদানী ইন্ডাষ্ট্রিয়াল কমার্শিয়াল কালচারকে, গ্রামের শ্বাশত বহমান সৃজনশীলতার ধারা দিয়ে টেকাতে হবে, জয় করতে হবে।
শত শতাব্দীর বাঙালী আজ হীনমন্যতার ভারে ন্যুজ¦, কুজ¦। স্বাদেশিকতা দেশ থেকে শেষ। গৌরব যত বিদেশের অপকৃষ্টকে নক করায়। বাংলা এই সেদিনও পৃথিবীতে সবচাইতে ধনোৎপাদনশীল দেশ ছিল, এখন সবচাইতে দরিদ্র। এই অসম্ভব পতনের ভিতরেও বাঙালিত্ব বলে এক মানবন্ধন, সমাজবন্ধন, পরিবারবন্ধন এই গরিব মানুষগুলোর মধ্যে আছে, যা পৃথিবীতে আর কোথাও এমন করে নেই। বাঙালী একা বাঁচে না, পরিবারের জন্যে বাঁচে। বিদেশে আত্মা ক্ষয় করা গ্লানিকর নিত্যদিনের পৌন:পুনিক শ্রম থেকে যা-ই পায় সে, ক্ষুন্নিবৃত্তি শেষে সবটুকু পাঠায় দেশে। সে জানে না তার এই জীবন ক্ষয়ে পাঠানো ধনে অশ্লীল পাকা দলান উঠছে শস্যক্ষেত্রে, অলস বাবুর দল সৃষ্টি হচ্ছে। সামাজিক বৈষম্য বাড়ছে। বাঙালী যে-টানে বাইরে গিয়ে না খেয়ে দেশে টাকা পাঠায়, সেই টান তার পুরনো সভ্যতা-সংষ্কৃতি জীবন ধারার টান। বাঙালী তো কেবলি পরিবারের জন্য বাঁচত না কেবল। পরিবারগুলো বাঁচত আমাদের জন্য। যে বৃদ্ধা পিতামহী মারা যাবার কালে দুই বিঘা জমি মাত্র রেখে যায়, বলে যায় তার এক বিঘা ওয়াক্ফ্ হবে, বাকিটা পাবে সন্ততি। বাংলাদেশ ব্রহ্মোত্তর সম্পদ ছিল কতই, সমাজ সেবার জন্যে। এইসব যাচ্ছে, গেছে। সংষ্কৃতিকে সরিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে লোভ-লালসা, ব্যক্তির নিজের একার ভোগ-বিলাসের স্বপ্ন। ফলে হানাহানি, ফলে বহমান মনুষ্যত্বের ধারা হচ্ছে ব্যক্তি-প্রাধান্যের চরিত্রহীন মরুতে হারা। জায়গা করছে হীনমন্যতা, আত্ম-বিশ্বাস।
আজ যত অবক্ষয় তা সব ঠেকিয়ে বাংলার অনিরুদ্ধতাকে জয়ী করতে, সমাজ-মানুষকে সফল সার্থক জীবন দিতে আমরা বাংলার শ্বাশত সংষ্কৃতির দিকে আমাদের প্রাণের সকল আশা নিয়ে তাকাচ্ছি। জেলা সংষ্কৃতি সম্মেলন হোক আত্ম-আবিষ্কারের পথ। অতীতের হাজার হাজার বছরে সকল শ্রমজাত সুকৃতির সঙ্গে মিলনের আলোতে এক উজ্জ্বল সৃজনশীল আত্মবিশ্বাসী সমাজ ও ব্যক্তি জীবন গড়বার পথ। না, ব্যান্ড সঙ্গীত নয়, নয় আধুনিক গান, নয় এমনকি বরীন্দ্রসঙ্গীত- আজকের কাজ আমাদের গ্রামীণ নিজস্বতায় ভাস্বর বৈশিষ্ট্যকে খুঁজে পাওয়া। তাকে তুলে ধরে গর্বিত হওয়া। আর তা হলেই আমরা রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্তের স্বার্থক ভোক্তা হতে পারবো। আসুন, আমরা মৃৎপাত্র ব্যবহারে গৌরববোধ করি, মাদুরে শয়নে হীনতা না মানি। আসুন আমরা গ্রামকে জানি, মানি। একাকালে মফ:স্বল বলতে যে বাড়ির পাছদুয়ার-ব্যাকইয়ার্ড বোঝাত, তাকে আমরা সন্ধান করি ভালোবেসে, বাংলার ইতিহাসের সমস্ত ধন যে ওখানে লুকিয়ে আছে। কেবল তো লালন, হাছন রাজা, রাধারমন, দ্বিজদাস ;নয়, বাংলার কেবলি বাঙালী বিশ্ববীক্ষা, যা গ্রামের তৈরি, তাতো যে ছেয়ে আছে রবীন্দ্রনাথ থেকে রজনীকান্ত। জগদীশচন্দ্রের বিজ্ঞানের মূল মর্মবানী, প্রাণ উদ্ভিদসহ সকল জগদবস্তুর ঐক্য, এ তো উপনিষদ্ থেকে পাওয়া কোন সত্য নয়, নিরন্ন নিরাশ্রয় গ্রাম বাউলের গানে যে ধরা আছে সেই সত্য। স্বাধীনতা দিবস বাঙালির জন্য একটাই ২৬ মার্চ । [লেখক : ওয়াহিদুল হক। গণপ্রহরীর পুরোনো ফাইল থেকে]
