Sat. Sep 6th, 2025
ভারতীয় ভুতের আছরে বিএনপি কি দিশেহারা (?)

ভাষ্যকার : ভারতীয় ভুতের আছরে বিএনপি কি দিশেহারা। বাংলাদেশের মানুষ আগাগোড়াই বহুলাংশে ভারত বিদ্বেষী ছিলেন ও আছেন। সে কারণেই সিপাহী জনতার বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ক্ষমতাসীন স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম- এর প্রতিষ্ঠিত ‘বিএনপি’ ভারতের ‘আধিপত্যবাদ বিরোধী’ দল হিসেবে বিবেচনায় দেশের মানুষ বিএনপিকে সমর্থন করে আসছে। সেই ধারাবাহিকতার প্রমাণ রাখতেই ১৯৯১ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে এক জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যা বলেছিলেন এবং দৈনিক ইত্তেফাক সেই মূল্যবান উক্তিকে বড় বড় হরফে “ওদের হাতে গোলামির জিঞ্জির” লিখে শিরোনাম করেছিল।

১৯৭২- এ সাপ্তাহিক বিচিত্রা আত্মপ্রকাশ করে ১৯৯৭- এ বন্ধ হওয়া পর্যন্ত সময়ে বিশিষ্ট কলমযোদ্ধা ও এক সময়ের ডাকসাইটে সাংবাদিক চিন্ময় মুৎসদ্দি একটি দৈনিককে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া বিতর্কিত ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করতেন না’। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমানে নেতৃত্ব দেয়ার মতো শারীরিক অবস্থায় সুস্থ্য শরীরে বাংলাদেশে থাকার পরও কেন দলের নীরব কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে (?) বিএনপিকে কি ভারতের ভুতের আছরে পেয়েছে। যে কারণে জনগণের আস্থা ও ভালবাসার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে বিএনপির খোলসে আওয়ামীলীগদের নিয়ে ভারতের গুনগানে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। জনগণকে বোকা বা বোবা ভেবে নির্বাচন নির্বাচন আর আন্দোলনকারী গণতান্ত্রিক ঐক্যে দ্বিধা বিভক্তি সৃষ্টির ইঙ্গিত দিয়ে চলছেন। যদিও বিএনপি খোলসে ১ জন আওয়ামীলীগার বিএনিপতে যোগদানের বিপরীতে বিএনপি ১০ গুনন ১০ = ১০০ বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের দূরে ঠেলে দেয়া অর্থাৎ মনক্ষুন্ন হয়ে নীরবে বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া। ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলনে ভারত যখন কুপোকাত তখন বিএনপিও প্রকাশ্যে ভারতীয় পণ্য বর্জন করে জনতার সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে, জনগণ তা বিশ্বাস করেছিলেন। তবে হ্যা, যদি তা জনসমর্থন আকড়ে ধরে রেখে সমর্থন বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে ‘নাটকীয় দৃশ্য’ প্রদর্শন না হয়ে থাকে; তেমনটাই মানুষ ভাবছেন।

রাজনৈতিক সচেতন রসিক সামালোচকরা বলছেন, ডানপন্থী ও বামপন্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থনে। সেহেতু আপাত দৃষ্টে ডানপন্থিরা যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন তথা পশ্চিমা বিশ্বের দেশ সমূহের সমর্থক ও আশীর্বাদপুষ্ট হয় আর বামপন্থীরা যদি চীন পক্ষের সমর্থক ও আশীর্বাদপুষ্ট হয় এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সেনাবহিনীসহ ডান ও বামদের প্রকাশ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থনপুষ্ট হয়; তাহলে বিএনপিতো সে হিসেবে ভারতপন্থী শুধু নয়, উগ্রহিন্দুত্ববাদী-মৌলবাদী মোদি সরকার নেতৃত্বাধীন ভারতের মদদপুষ্ট হয়। তাহলে চীন সফরকারী বিএনপি নেতৃত্বাধীন সফরকারী দলের সফরও কি নাটকীয় দৃশ্য প্রদর্শন ছিল? সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থাধীনে এ বিষয়টিও জনগণকে ভাবিয়ে তুলছে। বিএনপি যেহেতু এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নয়।

রসিক সমালোচকদের মতে, দেশের উত্তরাঞ্চলকে মরুভূমি হওয়ার হাত থেকে রক্ষায় চীনের তিস্তা মহা-পরিকল্পনাসহ প্রয়োজনীয় প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা জনগণ উপলব্ধি করেছেন বলেই কি চীন সফর ও তিস্তা বাঁচাও স্লোগান। সাধারণ মানুষ আশা পোষণ করেন আধিপত্যবাদ বিরোধী ভূমিকা পালনে ‘দলের’ চেয়ারপারসন ও বয়োজ্যেষ্ঠ হিসেবে শহীদ জিয়ার সহধর্মীনি বেগম খালেদা জিয়া ভূমিকা নিবেন। তবে প্রতিবেশী ভারতের জনগণের সাথে বাংলাদেশের জনগণের বন্ধুত্ব আছে ও থাকবে। এবং তিনি তাঁদের যোগ্য সন্তানকে নির্দেশনা দিবেন, যাতে জীবন দিয়ে উপলব্ধি করার মধ্য দিয়ে ও মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য গলাটিপে হত্যার মতো প্রবাসী সরকারের সাথে সাত দফা চুক্তির আলোকে সৃষ্ট ভারত বিরোধী মনোভাবাপন্ন জনগণ যেন বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে না নেন। এবং জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে সচেষ্ট হন। আওয়ামীলীগ ও তার দোসরদের নিয়ে ভারতের মদদপুষ্ট ঐক্য নয়। স্বাধীনতা বিরোধী উগ্রবাদীও নয়, ভারতের মদদপুষ্টও নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে ঐক্যবদ্ধ শক্তি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করেছে, সেই জাতীয় ঐক্যই জনগণের কাম্য। 

 কেননা, স্বৈরাচারের স্বৈরাচারিত্বে দলের নেতাকর্মীরা যখন বিজয় অর্জনে মরিয়া অথচ চুড়ান্ত সময়ে দলের পিছিয়ে যাওয়ায় হতাশাগ্রস্থ ও দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকা নেতাকর্মীকে বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দিয়ে তারেক রহমান শহীদ জিয়া ও বেগম জিয়ার দল বিএনপিকে দেশের প্রধান দল হিসেবে ধরে রেখেছেন। শুধু দিল্লী-পিণ্ডি স্লোগানে নয়, বাস্তবতায় তা প্রমাণ করতে হবে, জনসমর্থনকে ধরে রাখতে। বিএনপি উদ্যোগ নিলে জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় হবে, এমন বিশ্বাস সচেতন মহলের। তবে হ্যাঁ, যদি এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াকে ভারতের বিরাগ ভাজনের কারণ মনে করে দলীয় কতিপয় নেতা মনক্ষুন্ন হন, তবে এই নাদান ভাষ্যকারের আগের ভাষ্যটা বিবেচনা করে দেখুন। ভাষ্যটা নিম্নে ‘জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য নয়তো জাতীয় সরকার কাম্য’ উপ শিরোনামের লেখাটি পড়ার জন্য নিচের দেওয় লিংকে ক্লিক করুন-

জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য নয়তো জাতীয় সরকার কাম্য

ভুতের আছরে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *