Mon. Sep 15th, 2025
নির্বাচিত ছাত্র সংসদকে হতে হবে শিক্ষার্থীদে প্রতিষ্ঠান

প্রসঙ্গ: : ডাকসু নির্বাচন

গণপ্রহরী রিপোর্ট : নির্বাচিত ছাত্র সংসদকে হতে হবে শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন ঘিরে গোটা জাতির দৃষ্টি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। অবশেষে গতকাল ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ সেই প্রতিক্ষিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবমুখর পরিবেশে দিনভর ভোট হয়। সারা দেশের সচেতন মানুষ প্রত্যক্ষ করেছেন- জাতির ভবিষ্যত নেতৃত্ব তৈরীর সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইন ধরে জাতির ভবিষ্যতখ্যাত শিক্ষার্থীরা যার যার ভোট তা তিনি নিজে প্রদান করেন। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মধ্য থেকে অনেকে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করলেও ভোটে উল্লেখযোগ্য কোনো অনিয়মের খবর নেই গণপ্রহরীর ডেস্কে। শিক্ষার্থীদের অভূতপূর্ব অংশগ্রহনের ডাকসু নির্বাচনকে সফল করতে ‘রায়’ প্রদানকারী ভোটদাতা শিক্ষার্থীদের, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী শিক্ষার্থীদের এবং আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সম্মানিত শিক্ষকমন্ডলী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কর্তব্য পালনকারী আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের জানাই গণপ্রহরী পরিবার পক্ষে অভিনন্দন। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকেও হতে হবে ছাত্র জনতার প্রত্যাশা পূরণে ভূমিকা পালনকারী।

উৎপাদক জনগণের নির্ভীক জাতীয় সাপ্তাহিক ‘গণপ্রহরী’ ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী ঐক্যজোট থেকে নির্বাচিত ভিপি, জিএস ও এজিএসসহ সকল নির্বাচিত ছাত্র প্রতিনিধিদের প্রতি আশাবাদ থাকছে- তারুণ্যের নেতৃত্ব সৃষ্টিতে এবং বিজ্ঞানসম্মত ও মানসম্মত উচ্চ সুশিক্ষাকে সার্বজনীন করাসহ জাতীয় আকাঙ্খা পূরনে নির্বাচিত ‘ডাকসু’ নেতৃত্ব শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ রেখে যথাযথ ভূমিকা পালনে আত্মনিয়োগ করবেন।

গণপ্রহরী মনে করে যে, ‘ডাকসু’সহ শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ হবে-‘ দেশপ্রীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ, জাতি ও জনগণের স্বার্থে আত্মবলিদানে বলিয়ান নেতাকর্মীদের ‘সংসদ’। এতে করে যে, বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তির আকাঙ্খা নিয়ে শ্রমজীবি শোষিত-বঞ্চিত-অধিকারহারা কর্মহীন-বেকার ও বৈষম্যের শিকার ছাত্র-যুবব্যক্তিসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার আপামর মানুষ আওয়ামী স্বৈর শাসক পক্ষের গুলির মুখে এগিয়ে যেতে যেতেই জীবন দিয়ে, পঙ্গু হয়ে, অন্ধ হয়ে এবং ত্যাগের মধ্য দিয়ে সফল করেছেন চব্বিশের গণঅভ্যূত্থান। 

ডাকসু নির্বাচনের শেষ মুহুর্তে আমাদের প্রাপ্য তথ্য ও মতামত ভিত্তিতে গণপ্রহরী ওয়েবসাইটে তুলে ধরেছিলাম যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ন পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানে শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকলে নির্বাচন সফল হবে বলে দেশবাসী বিশ্বাস করেন ও আশা  করেন। কেননা, তাঁদের সামনে রয়েছে ইতিহাসের স্বাক্ষ্য। যে স্বাক্ষ্য বলছে- “বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের নেতৃত্বে চব্বিশের সফল গণঅভ্যূত্থান দেশ, জাতি ও জনগণের সামনে নতুন করে তারুণ্যের সফলতার স্বাক্ষ্য হিসেবে তাঁদের সামনে ভাসছে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের শহীদদের রক্তপথে উনসত্তরের গণঅভ্যূত্থান থেকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী নব্বই-এর গণঅভ্যূত্থান এবং সাড়ে ১৫ বছর কালের ভারতের অনুগত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ ও তাদের দোসরদের স্বৈরশাসনের নিষ্ঠুরতা থেকে দেশ, জাতি ও জনগণকে মুক্ত করার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বের চব্বিশের সফল গণঅভ্যূত্থান।

তাই তাঁদের বিশ্বাস তারুণ্যরাই পারবে জনআঙ্খা পুরণ করতে। কেননা তাঁরা তা জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে বারবার প্রমাণ করেছেন। বিজ্ঞানসম্মত, মানসম্পন্ন সুশিক্ষা বিকাশের মধ্য দিয়ে শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ছাত্রসংসদের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন-সংগ্রাম অপরিহার্য। কেননা, দেশের আপামর মানুষ ইতিহাস পড়ে না, ইতিহাস লেখে না। তাদের দৈনন্দিনের জীবনপথ পাড়ি দিতে জীবন দিয়ে শিক্ষা নেন। তাদের জীবন থেকেও শিক্ষা অর্জনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র সামজের তথা তারুণ্যের। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ কোনো দলের নয়, ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের, যে শিক্ষার্থীরা জাতির ভবিষ্যত। সেহেতু দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত নয়, বিভেদ-বিভক্তি নয়। স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থসহ অতীতের ন্যায় সামগ্রিক জাতীয় স্বার্থে ভূমিকা পালনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকতে হবে, জাতির ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী ডাকসুসহ সকল কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ সমূহকে। এক মূহুর্তের জন্য ভুলে যাওয়া যাবে না যে, ‘ব্যাক্তির উর্ধ্বে সংগঠন আর সংগঠনের উর্ধ্বে দেশ’।”

পরিশেষে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রতি আশাবাদ থাকছে-‘জাতীয় ক্ষেত্রে এবং দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ মানুষের জন্মগত মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, সাম্য ও ন্যায় বিচারসহ জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করার মতো নেতৃত্ব তৈরীর পথ যেন উন্মুক্ত হয়। যে নেতৃত্ব মহান মুক্তিযুদ্ধের চুড়ান্ত লক্ষ্যের শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠাকল্পে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠনে এগিয়ে চলার পথে জাতীয় ঐক্যকে সুদৃঢ় করতে ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে ছাত্র সমাজকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে’। ছাত্র জনতার ঐক্য সুদৃঢ় হোক।

আরও পড়ুন- ডাকসু নির্বাচন শেষ মুহুর্তেও কঠিন পরীক্ষার মুখে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *