ডেস্ক নিউজ : পুলিশকে সুসংগঠিত করাই হচ্ছে এখন চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলা, এজন্য আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। পুলিশ যাতে কখনো জনবিরোধী অবস্থানে ফিরে যেতে না পারে সেজন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা উৎসাহ, আগ্রহ ও নিষ্ঠার সাথে পুলিশকে সংগঠিত করছি। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন. সাজ্জাত আলী
আইজিপি, পুলিশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে পুলিশ কখনো এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি।
২৮ ডিসেম্বর, শনিবার রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির (বিআরপিওডব্লিউএ) ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান পৃষ্ঠপোষক আইজিপি বাহারুল আলম এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিপ্লব-পূর্ব এবং বিপ্লব-পরবর্তী পুলিশের মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে। প্রাক-বিপ্লবী যুগে পুলিশ ফ্যাসিবাদী সরকারের লাঠিসোটা হয়ে উঠেছিল। ফলে জনরোষের মুখে পড়তে হয়েছে পুলিশকে। পুলিশের নেতৃত্বের স্তর ভেঙে পড়েছে, পুলিশ জনগণের আস্থা হারিয়েছে।
আইজিপি বলেন, জাতীয় জীবনে গর্বিত হওয়ার মতো পুলিশের অবদান রয়েছে। এই বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণ রুখে দিয়ে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে।। আমরা সেই শক্তির উত্তরসূরি।
পুলিশ প্রধান বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর পুলিশকে পুনর্গঠনের পবিত্র দায়িত্ব আমার ওপর বর্তায়।। আমি আশা করি পুলিশ পুনর্গঠনের এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা আমাকে সমর্থন করবেন।
এ ঘটনায় ডিএমপি কমিশনার বলেন, জুলাই ও আগস্টের ঘটনা পুলিশের জন্য লজ্জাজনক। এই লজ্জাজনক ঘটনা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। পেশাদারিত্বের সঙ্গে মানুষকে সেবা দিতে হবে। আর এই সেবা প্রদানের মাধ্যমে আমাদের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে হবে।
অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি ইয়াসমিন গফুর।। অনুষ্ঠানে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সমিতির মহাসচিব অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিয়া লুৎফর রহমান চৌধুরী।
সমিতির পক্ষ থেকে আইজিপি বাহারুল আলম সমিতির পাঁচ সিনিয়র পুলিশ সদস্যকে ক্রেস্ট প্রদান করেন। কমিউনিটি পুলিশিং ও সমাজসেবা কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের জন্য তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘এসএম আহসান স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়াও নির্যাতিত নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় ভিকটিম সহায়তা কার্যক্রমে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে ‘অধ্যাপক অনামিকা হক লিলি-ড.এম এনামুল হক পুরস্কার প্রদান করা হয়।
এরপর সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশ পরিবারের সন্তানদের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা ৪০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ‘মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী-এম শহীদুল ইসলাম চৌধুরী শিক্ষা তহবিল’, ‘মরহুম মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী-মরহুম নুরজাহান চৌধুরী’কে পুরস্কৃত করা হয়।
এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা ১৮ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে ‘এমএন ভক্ত-শিপ্রা ভক্ত শিক্ষা তহবিল’ এবং ‘ক্ষিতীশ চন্দ্র মল্লিক-মায়া মল্লিক শিক্ষা তহবিল’-এর অধীনে সমিতি কর্তৃক বৃত্তি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এ সময় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় গত এক বছরে সমিতির বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ডের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর সমিতির সকল নিহত সদস্য এবং জুলাই-আগস্ট বিদ্রোহে শহীদ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এ উপলক্ষে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সমিতির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
