Sun. Jul 13th, 2025
শীত কাপাচ্ছে দেশ : দিশেহারা শ্রমনির্ভর মানুষশীত কাপাচ্ছে পুরো দেশ

গণপ্রহরী ডেস্ক : শীত কাপাচ্ছে দেশ দিশেহারা শ্রমনির্ভর মানুষ। শীত জেঁকে বসেছে সারা দেশে। ঘন কুয়াশা আর ঠাণ্ডা স্রোতে কনকনে হাড় হিম শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশের বিভিন্ন জেলার উপর দিয়ে মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে শ্রমনির্ভর মানুষের কাজকর্ম করা দূরহ হয়ে পড়ছে। এতে তাঁদের সংসার জীবনে সীমাহীন কষ্ট নেমে এসেছে। যে শীত আরও অব্যাহত থাকতে পারে।

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়ে হঠাৎ করে তাপমাত্রা নেমে গেছে ৮ ডিগ্রিতে। ফলে শীতে কনকনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলার তেতুলিয়া আবহাওয়া কেন্দ্রে শুক্রবার সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

লালমনিরহাট, একটি সীমান্তবর্তী জেলা, হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত, তাই প্রতি বছর ঘন কুয়াশায় কনকন দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় শীতল। গত তিন দিন ধরে এ জেলায় সূর্যের দেখা নেই। এ অঞ্চলের দরিদ্র, প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী ​​মানুষ শীত বস্ত্রের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বের হচ্ছে না। গ্রামাঞ্চলে অনেকেই আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডার সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করছেন।

আজ শুক্রবার লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলায় ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কুয়াশা ও পশ্চিমা বাতাসের কারণে বোরো বীজতলা ও আলু ফসল নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা।

লালমনিরহাট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডিসেম্বরে লালমনিরহাটে শীতের তীব্রতা তেমন একটা পরিলক্ষিত না হলেও গত তিন দিনে আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। লালমনিরহাটসহ আশেপাশের এলাকায় তাপমাত্রা এখন ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।  

কনকনে ঠাণ্ডা হয়ে পড়েছে দক্ষিণের জেলা পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার মানুষ।। আবহাওয়া কেন্দ্র বৃহস্পতিবার রাতে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে। মৃদু বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। দরিদ্র, প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী ​​মানুষ শীতে ভুগছে।

এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘন কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। কুয়াশায় ঢাকা পুরো শহর। পুরো রাজধানীতে জেঁকে বসেছে শীত।

সকালে শীতের হাত থেকে বাঁচতে ভারী শীতের পোশাক পরে কর্মস্থল ও অফিসে যান নগরবাসী।

চলতি জানুয়ারি মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ ৫টি শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কিছু শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে দেশের তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, আগামীকাল ৪ জানুয়ারি ময়মনসিংহ, সিলেট ও ​​চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে

আরও কুয়াশা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দেশের অন্য ৫টি বিভাগের জেলাগুলোর ওপর হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

তিনি আরও বলেন, আগামী ৫ জানুয়ারি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। খুলনা বিভাগের উত্তরাঞ্চল এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি ঘনত্বের কুয়াশা পড়তে পারে।

আগামী ৬ জানুয়ারি দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলো কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা বিভাগের জেলাগুলোতে আরও কুয়াশা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এছাড়া ৭ জানুয়ারি সারাদেশ কুয়াশায় ঢেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাগুলোতে আরও কুয়াশা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, এই বৈরী আবহাওয়া অনুকূলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *