Sat. Jul 12th, 2025
‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতু’র নাম পরিবর্তন করা হয়েছে‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতু’র নাম পরিবর্তন করা হয়েছে

গণপ্রহরী রিপোর্ট : ‘বঙ্গবন্ধু রেলসেতু’র নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। যমুনা নদীর ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামাঙ্কিত এ সেতুর নাম ‘যমুনা রেলসেতু’ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন ২২ ডিসেম্বর রোববার এ তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যমুনা নদীর ওপর নির্মিত রেলসেতুর নাম বঙ্গবন্ধু রেল সেতু থাকবে না। এটি এখন যমুনা রেল সেতু নামে উদ্বোধন করা হবে। ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে এই রেল সেতুটি উদ্বোধন করা হতে পারে। সেভাবেই কাজ চলছে।

রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, রেলওয়েতে ইঞ্জিনের ঘাটতি রয়েছে, আমরা চাইলেও নতুন ট্রেন দিতে পারছি না। তবে মহামান্য রাষ্ট্রপতি অনুরোধ করেছিলেন পাবনার জনগণের জন্য নতুন কোনো ট্রেনের ব্যবস্থা করা যায় কিনা। আমরা সেটা নিয়ে ভাবছি।

এর আগে গত শুক্রবার রেল সেতু পরিদর্শন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিমুল ইসলাম। সেই সময়ে তিনি জানিয়েছিলেন, তারা নিজ নিজ এলাকার স্থান অনুযায়ী বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণে আগ্রহী। যমুনা নদীর উপর নবনির্মিত রেল সেতুর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হতে পারে। যমুনা নদীর উপর নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নাম বাতিল করে গেজেট করা হয়েছে।

রেলওয়ের তথ্যমতে, এখন যমুনার উপর বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুতে মিটারগেজ রেল সংযোগে সর্বোচ্চ ৪৩.৭০ কিলো-নিউটন/মিটার লোডের পারমিশন রয়েছে। ট্রেনে আরও কোচ বা বগি যুক্ত করার সুযোগ নেই; সেই সাথে রয়েছে ১ লাইনের সীমাবদ্ধতা। রেলওয়ের পক্ষে বেশি ট্রেন চালানো সম্ভব নয়। এই সেতুতে মাত্র ২০ কিলোমিটার গতিতে ৪.৮ কিলোমিটার সেতু অতিক্রম করতে প্রতিটি ট্রেনের প্রায় ২৫ মিনিট সময় লাগে।

সেতুতে লাইন ১টি থাকায় উভয় পাশের স্টেশনে সিগন্যালের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হতো। সব মিলিয়ে মাত্র ৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে এক ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। বঙ্গবন্ধু রেল সেতু উদ্বোধন হলে এ রুটে গড়ে এক ঘণ্টা সময় বাঁচবে। ক্রসিংয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। এর ফলে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬টি এবং খুলনা বিভাগের ১০টি জেলার যাত্রীরা দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবেন।

বিগত ২০২০ সালের ৩ মার্চ ট্রেনযাত্রীদের দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষায় বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর সমান্তরালে দীর্ঘ ৪.৮০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসেতু নির্মাণের জন্য বিগত সরকার অনুমোদন করেছিল এই প্রকল্পটি।

প্রায় ৪.৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালের ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসেতুতে রেলওয়ের তথ্যমতে, ৭.৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ে অ্যাপ্রোচ এমব্যাংমেন্ট ও লুপ সাইডিংসহ রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেতুর ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ 250 কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচল করতে পারে। তবে শুরুতে (উদ্বোধনের এক বছর পর থেকে) ট্রেনটি ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিতে চলবে। সেতু পার হতে সময় লাগবে সাড়ে তিন থেকে চার মিনিট।

সেতুর প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, জাপানের পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডব্লিউডি-১ ও ডব্লিউডি-২ নামে দুটি প্যাকেজে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ডব্লিউ-১ প্যাকেজটি জাপানি আন্তর্জাতিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওবাইসি, টোয়া কর্পোরেশন এবং জেইসি (ওটিজে) জয়েন্ট ভেঞ্চার যৌথ উদ্যোগ দ্বারা বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাপানি ঠিকাদার ইয়াশিমা সেতুর উভয় প্রান্তে দুটি স্টেশনে সিগন্যালিং সিস্টেম ইনস্টল করার জন্য ডব্লিউ-৩ প্যাকেজের কাজ করছে।

সেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নতুন এই রেলসেতু দিয়ে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ব্রডগেজ ট্রেন এবং ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে মিটারগেজ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

বর্তমানে পুরাতন যমুনা সেতু দিয়ে প্রতিদিন ৩৮টি ট্রেন চলাচল করছে। রেলওয়ে নতুন ব্রিজ চালু হওয়ার পর আন্তঃনগর, লোকাল, কমিউটার এবং মালবাহী ট্রেন সহ 88টি ট্রেনকে টার্গেট করেছিল। কিন্তু রেলওয়েতে সেই বাস্তবতা নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *