আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বৈরাচার সরকার হাসিনার পর আরেক শক্তিধর আসাদের পলায়ন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। যিনি ছিলেন একজন স্বৈরশাসক। বিদ্রোহীদের ভয়ে রবিরার ভোরে তিনি রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে যান অজানা গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যার মধ্য দিয়ে মাত্র ১২ দিনে সিরিয়ার আসাদ পরিবারের দীর্ঘ ৫৪ বছরের স্বৈর শাসনের পতন হয়।
বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এই অভূতপূর্ব বিজয় অর্জন করলেন মাত্র ১২ দিনেই। প্রেসিডেন্ট বাশার পালিয়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহীদের সঙ্গে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার ঘোষাণা দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজী আল-আসাদ।
সিরিয়ার স্বৈরশাসক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে ২০১১ সাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বাশার বিক্ষোভকারীদের দমনে অবলম্বন করেন বিদ্রোহীরা। যার ফলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
পরবর্তীতে, রাশিয়া, লেবাননের হিজুল্লাহ ও ইরান বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে পিছু হটতে বাধ্য হয় বিদ্রোহীরা।
লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ সাম্প্রতিক সময়ে দুর্বল হয়ে যাওয়া, চিরশত্রু ইসরায়েলের দিকে ইরানের মনোনিবেশ ও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে আবরও তৎপর হয়ে ওঠে বিদ্রোহীরা।
এরই ধারাবাহিকতায় হায়াত তাহরির আল-শাম গত ২৭ নভেম্বর মোহাম্মদ আল জোলানির নেতৃত্বে হঠাৎ করে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে শুরু করে অভিযান। দ্বিতীয় বড় শহর আল্লেপ্পো দখল অভিযান শুরু হয় সেই দিন থেকে।
বিদ্রোহীরা এগিয়ে যান অপ্রতিরোধ্য গতিতে। বিদ্রোহীরা আসাদ পরিবারের ৫৪ বছরের শাসনামলের পতন ঘটালেন মাত্র ১২ দিনে। আর তার সাথে সাথে বাশার আল আসাদের ২৪ বছরের ক্ষমতার পতন ঘটলো। তাদের অভিযান আসাদসহ তার মিত্রদের এবং গোটা বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে।
মূলত গত ২৭ নভেম্বর বিদ্রোহীরা সিরিয়ার ২য় বৃহত্তম শহর আল্লেপ্পোতে আক্রমন শুরু করে। তারপর ১ ডিসেম্বর আল্লেপ্পোল কুর্দি যোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অল্প সংখ্যক কুর্দি এলাকা ছাড়া বাকি অংশ বিদ্রোহীরা নিজেদের দখলে নেয়। তারপর ডিসেম্বরের ৫ তারিখে দখল করে সিরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তর শহর হামা। আর ৭ ডিসেম্বর বিদ্রোহীরা আসাদ সরকার নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ঘেরাও অভিযান কার্যক্র শুরু করে।
উল্লেখ্য, টানা সাড়ে ১৫ বছর ধরে দেশ শাসন করার পর ৫ই আগস্ট একনায়ক হিসেবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ছাত্র ও গণ-আন্দোলনের তোপের মুখে তার শাসনের পতন হয়। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার সম্পূর্ণভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তার একক কর্তৃত্বের শাসন ব্যবস্থার জন্য। গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়।
