হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা : হবিগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চেলের কৃষকরা দুশ্চিন্তায়। দুশ্চিন্তার মূলে রয়েছে জলাবদ্ধতা। ‘যে জলাবদ্ধতার জন্য কৃষকরা বোরো ধান চাষ ব্যহত হওয়ার আশংকায়। কারণ বীজতলা তৈরীর সময় এখনই। অথচ জলাবদ্ধতা তাদেরকে সময় মতো বীজতলা তৈরী করে, সেখানে উৎপাদিত চারা রোপন করতে পারছেন না। যদিও বর্ষা শেষ হয়েছে। কিন্তু পানি নামেনি জেলার ভাটি এলাকার হাওর থেকে। সে কারনেই দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।
অপরদিকে, জলাবদ্ধতার পানি না শুকানোর ফলে বীজতলা তৈরীতে যেমন দেরি হচ্ছে। তেমনি চারা রোপনেও দেরি হবে। আর দেরির কারণে ভাগ্যক্রমে বোরো ধান উৎপাদিত হলেও ধান কাটার সময়টাও পিছিয়ে যাবে। এতে করে পিছিয়ে যাবে ধান কাটা অর্থাৎ বৈশাখের ধান কাটা বৈশাখে হবে না। এতে আগাম বন্যার পানিতে ধান ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা বাস্তবরূপ পেতে পারে। তাতে দুঃখের শেষ থাকবেনা কৃষকদের। তাইতো হবিগঞ্জ জেলার হাওর অঞ্চলের কৃষকরা দুশ্চিন্তায়।
সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ মূলত: হাওর-বাওর বেষ্টিত জেলা। কৃষি নির্ভরশীল জেলার বেশিরভাগ মানুষ বছর জুড়েই কৃষিকাজ নিয়েই ব্যস্ততায় সময় কাটান। কিন্তু র্দুভাগ্যবশত: বীজতলা তৈরীর সময় শেষ পর্যায়ে হলেও জেলার ভাটি এলাকার হাওর জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা না পাওয়ায় অর্থাৎ পানি না শুকানোর জন্য বীজতলা তৈরী করতে পারছেননা। তবে পানি নেমে গেছে সেখানে বীজতলা তৈরী ও কিছু কিছু চারা রোপন নিয়ে ব্যস্ত হয়েছে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।
আর এই দুর্ভাগ্যের জন্য দায়ী, ক্ষমতাধর-বিত্তবানদের মাছ চাষ ও মাছ শিকারের সুবিধার জন্য হাওরে বেড়িবাঁধ দেওয়া। দ্বিতীয়ত: রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থে ক্ষমতাধর বিত্তবানদের স্বার্থকে প্রধান্য দেয়ায়। এটা করতে গিয়ে পলিমাটি দিয়ে ভরাট হাওর, নদী-নালা, খাল-বিল পরিকল্পিতভাবে খনন না করায়ই, বন্যা শেষে পানি নামে না। বরং জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে কৃষক জনসাধারণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় ও হচ্ছে। এর ফলে হবিগঞ্জের হাওর অঞ্চলের কৃষকরা দুশ্চিন্তায়। এদিকে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হবিগঞ্জ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাংবাদিকদের জানিয়েছেন হাওরের পানি না নামায় বীজতলার জমি শুকায়নি। এতে সমস্যা হচ্ছে বীজ তলা তৈরীতে। তিনি বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব উঁচু জমি খুজে বের করে শেষ সময়ের মধ্যে বীজতলা তৈরী করতে হবে কৃষকদের। তাঁর অফিস সূত্র জানিয়েছে, হবিগঞ্জ জেলায় বোরো চাষের জন্য এক লাখ তেইশ হাজার তিনশ বিশ হেক্টর (অর্থাৎ ১, ২৩, ৩২০ হেক্টর) জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত রয়েছে।
এপরিস্থিতিতে যাতে হবিগঞ্জের হাওর অঞ্চলের কৃষকরা দুশ্চিন্তায় না থাকেন, সেজন্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সামাজিক নেতৃবৃন্দে ও কৃষকদের সাথে পরামর্শক্রমে বীজতলার উপযোগী উঁচু জমি নির্ধারন করতে, কৃষি বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে মনোযোগী হতে হবে। তাঁরা তা আন্তরিক ভাবে করবেন বলে হাওরের বোরো চাষীদের পক্ষে সংবাদদাতার আশাবাদ।
[প্রয়াত প্রবীন সাংবাদিক শামসুর রহমানের আত্মীয় পরিচয়ে প্রেরিত সংবাদদাতার জানানো তথ্য ভিত্তিক খবর-হাওরবাসীর কল্যাণে প্রকাশিত]
