Thu. Mar 27th, 2025
  টিসিবির সরবরাহ কম বাজারও নিয়ন্ত্রণহীন তাহলে-(?)    টিসিবির সরবরাহ কম বাজারও নিয়ন্ত্রণহীন তাহলে-(?) ফাইল ছবি

গণপ্রহরী রিপোর্ট : টিসিবির সরবরাহ কম বাজারও নিয়ন্ত্রণহীন তাহলে – (?) দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মভীরু মুসলমান জনগোষ্ঠি পবিত্র রোজার মাসে রোজা পালনে নুন্যতম ইফতারী সামগ্রীসহ অন্তত: সেহরী ও রোজা শেষে রাতের খাবার অর্থাৎ দু’বেলা খাবারের নিশ্চয়তা আসা করে আসছিলেন। কিন্তু কারও ভিক্ষা বা দানখয়রাতে নয়। কর্মক্ষম বেকার-যুব ব্যক্তিদের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর কাজ, যার বিনিময়ে যা উপার্জন হবে তা দিয়ে তাদের চাহিদা পুরণ হবে। আর যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের উপার্জিত অর্থে চাহিদা পুরণের নিশ্চয়তা এবং কর্মহীনদের যোগ্যতানুসারে কর্মের ব্যবস্থা। তাঁদের এই চাওয়া, মৌলিক অধিকার হিসেবে সাংবিধানিক অধিকারে বটে।

কিন্তু দুর্ভাগ্য জাতির। সর্বোপরি দুর্ভাগ্য সকল ধর্ম-বর্ণ-আদিবাসী-উপজাতিসহ বাংলাদেশী জনগণের। এক নদী রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার, ন্যায় বিচার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করার বিষয়গুলো তেপ্পান্ন বছরেও নিশ্চিত হয়নি। সে রোজাই কি বা অন্যান্য ধর্মীয় উৎসব কি। মানুষকে বাঁচতে হলে খেতে হবে। গত পরশু ২৬ ফেব্রুয়ারি গণপ্রহরী ‘বাড়ির গেটে রোজা খাদ্যসামগ্রীর নিশ্চয়তা আবশ্যক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যেন সাধারণ ও স্বল্প আয়ের মানুষকে ‘কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিলো’ মাত্র। কেননা, গতকালই গণমাধ্যম বলছে রোজার মধ্যে বহুল ব্যবহৃত ছোলা (বুট) পর্যাপ্ত সরবরাহ সত্বেও কেজিতে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবমিলে বাজারদর নিয়ন্ত্রণহীন এবং টিসিবির সরবরাহকৃত সামগ্রী চাহিদার তুলনায় অর্ধেক অর্থাৎ অর্ধেক মানুষই ফিরে যাচ্ছেন দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে। অথচ মাঝে একদিন বাকি রোজার। যদিও এই ন্যায়সঙ্গত দাবিটি দেশের সকল নাগরিক জনগোষ্ঠির। সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ মুসলমান বিধায়, রোজার বিষয়টি ঘুরে ফিরে আসছে। প্রশ্নও জনমনে, ‘টিসিবির সরবরাহ কম বাজারও নিয়ন্ত্রণহীন তাহলেÑ (?)

অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ গণমাধ্যমে ‘বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমছে না কেন (?) শিরোনামের এক লেখায় লিখেছেন, ‘দেশের বেশির ভাগ মানুষ রাজনীতি বোঝে না। তারা শুধু বোঝে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আছে কি-না। যারা এর নিশ্চয়তা দিতে পারবে, মানুষ তাদেরই সাদরে গ্রহণ করবে। মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে রাখতে সরকারকে তাই অভিনবত্বের সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে’।

আমরাও গণপ্রহরীর পক্ষে বার বার বলে আসছি বিদায়ী চব্বিশের জুলাই আগষ্টের বৈষম্যবিরোধেী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে রক্তার্জিত সফল গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে ক্ষমতাসীন হন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই সরকারের কাছে মানুষের প্রত্যাশা ছিল বাজারদর নিয়ন্ত্রণে ও মানুষের আয়ত্বের মধ্যে থাকবে। স্বৈরশাসকের ও তাদের প্রভু ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ পরিচালিত বাজার সিণ্ডিকেটের অবসান হবে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা যেমন সজাগ থাকবেন, তেমনি নির্বাচিত সরকার গঠনে ইচ্ছুক রাজনীতিবিদরা জনগেণর পাশে থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেষ্ট থাকবেন। তবে হ্যাঁ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ কয়েকদিন বাজার মনিটরিংসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ভূমিকা পালন করেছিলেন বটে। কিন্তু আন্দোলনকারী সকল শক্তির ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা না থাকায় এবং সরকারের সাথে প্রশাসনের আমলাদের মধ্যে ফারাক থাকায় সুফল আসেনি। বরং বাজারদর বেড়েই চলছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষের নাভিশ্বাস ছুটছে।

আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির ন্যায় সরকারকে জরুরীভাবে সকল রাজনৈতিক দল, প্রশাসন ও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের প্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বিত সিদ্ধান্ত গ্রহন সাপেক্ষে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। মনে রাখতে হবে, প্রতিবেশী বৃহৎ দেশ ভারত-তার অভ্যন্তরীন সংকট থেকে, ভারতের মুক্তিকামী বীর জনগণের দৃষ্টি ঘুরাতে, শেখ হাসিনাকে সামনে ঠেলে দিয়ে, অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং জনগণকে সংগঠিত রাখতে বাজারদর নিয়ন্ত্রণ, সিণ্ডিকেটের অবসান এবং সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় জাতীয় ঐক্য সুদৃঢ় করতে হবে। এ মুহুর্তে দেশ, জাতি ও জনস্বার্থে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।

আরও পড়ুন- বাড়ির গেটে রোজা খাদ্যসামগ্রীর নিশ্চয়তা আবশ্যক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *