নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশপ্রীতিতে নয় আওয়ামীপ্রীতিতে অন্ধ তাঁদেরই বলছি। আওয়ামীপ্রীতিতে ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’-প্রবাদের মতো ভাগ্য বদলিয়েছেন; অর্থ-সম্পদের ক্ষেত্রসহ সামাজিক ক্ষেত্রেও; মূল দল-আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগ ও মহিলা আওয়ামীলীগের পদ-পদবীও জুটেছে। পদ-পদবির পাশাপাশি শেখ হাসিনার বন্দনায় এগিয়ে থাকা নেতা-নেত্রীদের মধ্যে বেশি এগিয়ে থাকা ভাগ্যবানদের ক্রমানুসারে মন্ত্রী-হুইপ-এমপি, জেলা, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান হয়েছেন এবং কমিশনার সদস্য হয়েছেন। ইজারাদারিতেও ভাগ্যবান ও তাদের সহযোগীরা। সেই সাথে সংসদীয় কমিটিসহ বিভিন্ন কমিটির পদ-পদবীও জুটেছে অনেকের। তাঁরাতো শিরোনাম দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। আর ক্ষিপ্রতা থেকে ক্ষিপ্ততা বসে কোন গালি দিবেন, গোছাতে পারছেন না। তা গোছাতে থাকেন, লেখার আরেক প্যারা শুরু করা পর্যন্ত সময়ে।
এতক্ষনে হয়তো ভূমিকায় উল্লেখিত প্রতিবেদককে কি কি গালি দিবেন তা হয়তো গুছিয়ে গালিগালাজ করার পর্ব শেষ করেছেন (!) কেওবা ‘নীরবতা বুদ্ধিমানের লক্ষণ’ ভেবে এ নিয়ে ভাবছেন না, গালও দেননি। আবার কেও হয়তো ভেবেছেন, ভাগ্য যতটা বদলিয়েছেন, তাতো এ লেখার জন্য অর্থ-সম্পদের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। এ লেখায় কি যায় আসে। তবে যত কর্কশ গালি দেন না কেন, লেখার স্বার্থে লিখছিতো, লিখতে লিখতে সব গালিগালাজ হজম হয়ে যাবে। মেরে ফেললেও দু:খ থাকবে না।
কেননা, যারা ‘বিবেককে’ পাথর চাপায় চাপা দিয়ে, প্রবীণ নেতা-কর্মীসহ অসংখ্য নেতাকর্মী সমর্থকদের ব্যবহার করেই; বঞ্চিত-অমূল্যায়িত নেতা-কর্মীদের কাঁধে বন্দুক রেখে ফুটানোর মতই ব্যবহার করে, ব্যক্তি স্বার্থ ও গোষ্ঠি স্বার্থ উদ্ধার করে ‘আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ হওয়ার প্রবাদের মতো ভাগ্যে বদলাতে পারেন; তাদের দ্বারা গালিগালাজ, মারধর ও খুন-হত্যা-গুম সংঘটিত করা অসম্ভব নয়। তার প্রমাণ জাতির সামনে ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে ও পাচ্ছে। প্রচলিত কথায় আছে ‘পাপ ছাড়ে না বাপকে’। তাই, মনে করে দিতেই ‘দেশপ্রীতিতে নয় আওয়ামীপ্রীতিতে অন্ধ তাদেরই বলছি’ শিরোনাম লেখার মধ্য দিয়ে।
মূলত: দেশপ্রীতিতে নয় আওয়ামীলীগ প্রীতিতে অন্ধ যারা তাদের জন্য আজকের এ লেখাটি লিখতেই বসিনি। এমনিতে লেখা লেখি ছেড়ে দিয়েছি। নামিদামি লেখকও নই। বীর মুক্তিযোদ্ধা পিতার আদেশে এবং সরকারি চাকরিজনিত কারণে গাইবান্ধা থাকায় গণপ্রহরী অফিসে যাতায়াত ছিল এবং মাঝে মাঝে লেখা লেখিও করতাম। ময়মনসিংহের নেত্রকোনায় অবসর জীবনযাপন করছি। ছেলেমেয়ে-নাতি-নাতনীর চাপে এখন লিখিনা। তারপরও বাবার (পিতার) আদেশ, তাই এক-দু’মাসে বা তার বেশি সময় ব্যবধানে দু’একটি লেখা পাঠাই, গণপ্রহরীতে।
পাশের গ্রামের আমার এক কাকাবাবু (বাবার বন্ধু) তাগিদে গত ৩০ নভেম্বর ‘ভাবতে হবে বঞ্চিত অমূল্যায়িত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীতেদর’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছিলাম। গণপ্রহরী ছাপা কপি ও ওয়েবসাইটে যারা লেখাটি পড়েছেন, তাদেরও অনেকের অনুরোধে আজকের দ্বিতীয় লেখাটিকে উপস্থাপনা। ও হ্যাঁ, ঢাকায় চাকুরির সুবাদে ঢাকাস্থ গণপ্রহরী অফিসেও যাতায়াত ছিল। এখনতো স্থায়ীভাবে গ্রামীন পরিবেশে বাপদাদার ভিটায় ঠাঁই পেয়েছি। শারীরিক কারণে চলছে পরপারে যাওয়ার অপেক্ষা।
আওয়ামীলীগের অতীত ইতিহাসকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে ছাইচাপা দেওয়া শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রে এবং ভারতের ভূমিকায় সৃষ্ট দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকে যাঁরা বংশানুক্রমে আওয়ামী রাজনীতি করতেন ও মনপ্রাণ দিয়ে দলকে ভালোবেসে এসেছেন এবং সমর্থন জুগিয়েছেন; তাদের নতুন করে ভাবনার আহ্বান নিয়েই মুলত; আজকের এই লেখা। তাই সুবিধাভোগী, লুটপাটকারি, বিদেশে অর্থপাচারকারি এবং পাহাড়-টিলা, নদ-নদী, খাল-বিল, হাট-বাজার দখলকারি-প্রভুত্বকারি-সম্পদলোভীদের স্বার্থে তারা দল করেননি। তাঁরা দল করেছেন দেশেকে ভালোবেসে।
সেহেতু তাদের কাছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও দেশের স্বার্থ প্রধান এবং দেশপ্রেমিক সকল দলমতের মানুষের মতোই তাঁদেরও দেশপ্রেম। তাদের একথাগুলো লেখার অনুরোধেই লিখতে হলো। সেদিকে থেকে গালিগালাজ সম্পর্কে গণপ্রহরী প্রধান সম্পাদক-মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১ নং সেক্টর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী গড়ে তুলে, তাঁদের নিয়ে জনগণকে সংগঠিত করে-‘ঐতিহাসিক রৌমারী মুক্তাঞ্চল’ ঘোষণাকারী ও জেড ফোর্সের অধীনে থার্ড বেঙ্গলের বিশেষ কোং ২ এম এফ কোম্পানীর যুদ্ধের নীতি কৌশল নির্ধারক ও নেতৃত্বদানকারী সম্মুখ বীর মুক্তিযোদ্ধা এসকে মজিদ মুকুলের কথা উল্লেখ করছি। তিনি অনেক লেখায় লিখেছেন, গাল দিলেও রাজাকার-আলবদর, বলবেন না। আমার কথাও তাই।
‘দেশপ্রীতিতে নয় আওয়ামীপ্রীতিতে অন্ধ তাঁদেরই বলছি’ শিরোনামের শেষ পর্যায়ে পূর্বাপর লেখার শিরোনামটুকু পুন:উল্লেখ করে দু’চার কথার মধ্য দিয়ে আজকের প্রতিবেদনের ইতি টানবো। ‘ভাবতে হবে বঞ্চিত অমূল্যায়িত আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের শিরোনামের লেখায় উল্লেখিত নেতামকর্মীদের’ উদ্দেশ্যে লেখার শেষাংশ। তবে এ মূহুর্তেউ পলব্ধিতে আসছে মূল শিরোনামের দেশপ্রীতিতে নয় আওয়ামীপ্রীতিতে অন্ধদের লেখা উদ্বৃত্ত করেই বলছি, ‘আপনারা অন্ধ বলেইতো অসংখ্য নেতাকর্মী-সমর্থকদের ব্যবহার করেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ’ প্রবাদকে নিজেদের জীবনে বাস্তব করতে পেরেছেন। এতে করে সহজ সরল আত্মবিশ্বাসী নেতাকর্মীদের কল্যাণে ও জাতির স্বার্থে মূলত: কিছু না করা, নেতাকর্মী সমর্থক জনগণ ও জাতির সাথে বিবেকবর্জিতভাবে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন।
মনে রাখতে হবে প্রচলিত কথায় আছে ‘পাপ বাপকেও ছাড়ে না’ এবং পাপ একসময় প্রকাশ পাবেই ও পাওয়া শুরু হয়েছে। তাই বলছি, দাম্ভিকতা নয়, অন্ধত্ব থেকে আত্মসমালোচনার মাধ্যমে এবং খোলস বদলিয়ে অসংখ্য নেতকর্মী-সমর্থক জনগণ ও জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে বেরিয়ে আসুন। অথচ যাদের ত্যাগ তিতিক্ষায় ক্ষমতায়, তাঁরাই বঞ্চিত ও অমূল্যায়িত। বাইরে লাল সূর্য উদিত। সেই উদিত সূর্যের লাল আভা বলছে-‘খোলস বদলিয়ে বঞ্চিত-অমূল্যায়িত প্রবীন নেতাকর্মীসহ সকল নেতাকর্মী সমর্থকদের সাথে একাত্ম হোন। সাবধান, কোন ষড়যন্ত্রে কৌশলে অংশ নিয়ে, দেশে কোন অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করবেন না। কেননা, জনগণ সর্বত্র সজাগ ও সচেতন। তাদের দু:খ কষ্ট আওয়ামী দু:শাসনেরই ফলশ্রুতি।
পরিশেষে, ‘জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস’ হৃদয়িকভাবে লালন করতে হবে। দেশকে সংগঠনের উর্ধ্বে বিবেচনা করতে হবে এবং দলের প্রবীনদেরসহ সকল নেতাকর্মী তাঁদের ত্যাগ তিতিক্ষা ও অবদানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে মূল্যায়ন করতে হবে। এবং তাদেরকে সংগঠনের প্রাণ ভাবতে হবে। কিন্তু মন্ত্রী-এমপি ও নেতারা সাক্ষাত দেননি তাদের। এসব যেমন হয়নি তেমনি ভারতকে প্রতিবেশী ‘পৃথক রাষ্ট্র’ না ভেবে ‘প্রভু’ বিবেচনা করাই আজকে আওয়ামীলীগের মতো দল নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে। এতে বাস্তবতা বলছে ভারত নির্ভর করে খোলস বদলালেও জনগণের কাছে এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের কাছে কেও গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে মনে হয় না।
যদিও তাদেরকে ব্যবহার করেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার মতো নিজেদের ভাগ্য বদলিয়েছেন। এবং যে অর্থসম্পদের পাহাড় গড়ার পাশাপাশি সিণ্ডিকেট ও কেডার বাহিনী গড়ে তুলেছেন; তার মাধ্যমে ক্ষমতায় ফেরার ষড়যন্ত্র করছেন। এটা বঞ্চিত অমূল্যায়িত নেতাকর্মীরা বুঝেছেন বলেই প্রতিপদক্ষেপে ব্যর্থ হচ্ছেন। ভারত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা পালন করেও লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ। প্রতিবেশী দেশগুরো ভারত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বরং নিজ দেশে অস্থিরতার পাশাপাশি লড়াই-সংগ্রাম চলছে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে সামনে।
